হঠাৎ করে মামা রুবজ এ রহমান বললেন , “ভাগনা, চল রাঙামাটি যাব। আমি কিছুটা বিষ্ময়ী দৃষ্টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম- কেন? মামা বললেন-পাত্রী দেখতে। মুহূর্তেই যেন মনের মধ্যে অদৃশ্য সুখের পরশা হাতছানি দিয়ে গেল। আমি চাপা উৎসাহ নিয়ে মামাকে বললাম- কখন যাবেন?
– বিকেল বেলাতেই রওয়ানা দেব।
– বেশ, তাই হবে।
বিকেল বেলায় আমরা রওয়ানা দিলাম। সেদিন আকাশের অবস্থাও ছিল চোখে পড়ার মত। সাদা মেঘের ভেলার ছুটাছুটি যেন অন্যরকম এক আবহ সৃষ্টি করে তুলছে। দুজনে হাঁটছি মেঠোপথ ধরে। আঁকাবাকা মেঠোপথ। চারদিকে শুধু সবুজ ফসলের সমারোহ। যতদূর দৃষ্টি যায় সবুজের স্নিগ্ধ আল্পনায় চোখ জুড়িয়ে আসে। ধান ক্ষেতের সরু আইলের উপর দিয়ে হাঁটছি আর মাঝে মাঝে সবুজ ধানের শিষে ভাললাগার পরশ মেখে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
আমি সামনে আর মামা পিছনে। কিছুদূর যেতেই আমি বললাম মামা, নিচে একটু দেখে আসবেন, ময়লা আছে। মামা কী যেন মনে করল বুঝতে পারলাম না। কেবল এইটুকুই বুঝলাম যে, আমার কথায় উনি বিশেষ গুরুত্ব দেন নি। ফলে যা হবার তাই হল। উনি যেই না উনার ডান পা ময়লার উপর ফেলেছেন আর অমনিই সেই ময়লা ওনার সারা শরীররে ছিটকে একেবারে লেপ্টে গেল। মামা তাকিয়ে দেখেন ওনার সারা শরীরে হলুদ কী যেন লেপ্টে গেছে! জিনিসটা ভাল করে বুঝার জন্য ওনি হাত দিয়ে দেখার চেষ্টা করলেন, পরে নাকের কাছে নিলেন। সর্দি থাকার কারণে বোধহয় ঘ্রাণশক্তি নিতে ব্যর্থ হলেন। কিন্তু হেরে যাওয়ার পাত্র উনি নন! পরে তা ওনার জিহ্বার আগায় দিলেন পরখ করার জন্য। দেওয়া মাত্রই বিদ্যুৎ গতিতে বললেন- এ যে গু… !!! ওয়াক থু !!!
ততক্ষণে আমার শরীরের কাঁপুনি ওঠে গেছে। মামা তার চোখ রক্তবর্ণ করে শুধু আমাকে বললেন, দুইদিন ধইরা প্রফেসারি শিখিয়া এখন গু’য়েরে কস ময়লা- না? বেয়াদ্দপ!
আমি তখন বুঝে ফেললাম এর পরের ঘটনা কী হতে পারে। তাই উপায়ন্তর না দেখে বাসার দিকে দিলাম ভূদৌড়!!! আমার নাগাল আর পায় কে !
…………………………….
১৯.০৭.২০১৪
টিলাগড়, সিলেট
মুনশি আলিম
বি এ অনার্স (বাংলা), এম এ (বাংলা) জাবি, এমফিল শাবিপ্রবি
সার্বিক যোগাযোগ: ০১৭৪১৪৩৬৮৫১
Email: munshialim1@gmail.com