মৌলভীবাজারে এবার সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ভাই কতৃক জলমহাল দখল

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ জলমহাল ইজারার মেয়াদ ৩ বছর অবশিষ্ট থাকার পরও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ছোট ভাই লিয়াকত আলী একটি জলমহাল দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা যায়, রাজনগর উপজেলাধীন হাওর কাউয়াদীঘির অন্তর্গত দনিয়া বড়বিড়ি বিল ২০১১ সালে একই উপজেলার রক্তা গ্রামের হাকিম মিয়া গংরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে ৬ বছরের জন্য লিজ গ্রহণ করেন।লিজ গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত তারা বড় বিলের ভোগ-দখল করিয়া আসিতেছেন। এর মধ্যে একই উপজেলার কেওলা(ধুলিজুরা) গ্রামের মৃত আকল আলীর পুত্র খেলা মিয়া উক্ত বিলের অধিকাংশ ভুমি তার পৈত্রিক সম্পত্তি দাবী করে লিজের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন।যা এখনো নিস্পত্তি হয়নি বলে হাকিম মিয়া দাবী করেন। এদিকে গত রবিবার দুপুরে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ছোট ভাই লিয়াকত আলী পৈত্রিক সম্পত্তি বলে দাবীদার খেলা মিয়াকে সাথে নিয়ে উপজেলার ফতেপুর ইউপি অফিসে, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান লয়লুছ সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হোসেন মেম্বার,মঙ্গল মিয়া,সাফী মিয়া,দিলাল মিয়াকে নিয়ে একটি বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে উল্যেখিত ব্যক্তি সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের ২০/২৫ জন নেতা-কর্মীকে সাথে নিয়ে নৌকা যোগে সরেজমিন বড় বিল হাওরে গিয়ে বিলের দখল দারিত্ব সমজিয়ে দেন মন্ত্রীর ছোট ভাই লিয়াকত আলী। একটি সুত্র জানায়,ঐ সময় তিনি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সহ পৈত্রিক সম্পত্তি দাবীদার খেলা মিয়াকে জলমহালের অর্ধেক অংশ বুঝিয়ে দিয়ে,বাকি অর্ধেক অংশের লভ্যাংশের মালিকানা তার নিজের বলে জানান।ঘটনাঠি জানাজানি হবার পর সুবিধা বঞ্ছিত স্থানীয় ছাত্রলীগ,যুবলীগ সহ আওয়ামীলীগের প্রবীন কিছু নেতা-কর্মী সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ভাইয়ের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, একটি জলমহাল দখল করতে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মন্ত্রীর ভাই সরেজমিন যাওয়াটা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ভাবমুর্তির প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে।তাছাড়া যাদেরকে নিয়ে তিনি সরেজমিন জলমহাল দখলে গিয়েছেন,তারা ঐ এলাকার বিতর্কিত নেতা।এ ব্যাপারে মন্ত্রীর ছোটভাই লিয়াকত আলীর বক্তব্য নিতে এ প্রতিবেদক তার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি জানান,ঐদিন তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে জলমহাল দখল করতে যাননি,তিনি গিয়েছিলেন ঐ এলাকার এক আওয়ামীলীগ নেতার বাড়ী।এদিকে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হোসেন মেম্বার ও মঙ্গল মিয়া প্রতিবেদককে জানান,ঐ জলমহালের বেশীরভাগ জমি খেলা মিয়ার পৈত্রিক সম্পত্তি,কিছুটা সরকারী থাকলেও মন্ত্রীর ভাই বলেছেন,সেটা সরকার থেকে লিজ এনে দেবেন।শাহবাজপুর গ্রামের দিলাল মিয়া প্রতিবেদককে জানান,মন্ত্রীর ভাই সরেজমিন গিয়ে তাদেরকে জলমহালের দখল বুঝিয়ে দিয়েছেন।ফতেপুর ইউপি আওয়ামীলীগের একাংশের সভাপতি হাজী কাপ্তান মিয়া সাংবাদিকদের জানান,মন্ত্রীর ভাই লুঙ্গি পরে এসেছিলেন শুনেছেন, কিন্তু অসুস্থতার জন্য তিনি আসতে পারেননি। তবে জলমহালে মন্ত্রীর ভাই তাকেও একটি অংশের মালিকানা দিয়েছেন। গবিন্ধপুর গ্রামের প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা শেখ বশির আহমদ মন্ত্রীর ভাইয়ের দখলদারিত্বের বিরোধিতা করে বলেন,শেখ মুজিবের আদর্শের আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরা এসব দখলদারিত্বে নেই।ঘটনাঠি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগে চলছে নানা কানাঘুষা।