বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের ৮৭ তম পর্ব অনুষ্ঠিত
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেটে জিলা শিল্পকলা একাডেমী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের তৃতীয় সিরিজের ৮৭ তম পর্ব । শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র এবং সিলেট নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক দিলদার হোসেন সেলিম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি ফখরউদ্দিন আলী আহমেদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জায়েদা শারমিন।
অনুষ্ঠানের প্রথম প্রশ্ন ছিলো-যখন হাজার হাজার ছেলেমেয়ে এইচ এসসি’তে সর্বোচ্চ গ্রেডে পাশ করছে, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে মাত্র দুইজন। শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে এই ফলাফল কী ইঙ্গিত দিচ্ছে?
উত্তরে জায়েদা শারমিন বলেন, শিক্ষার মানকে অবজ্ঞা করার মতো সময় এখনই আসেনি। এখানে সিলেবাস এবং কম সময়ে এটা শেষ করার চেষ্টা, শিক্ষকদের মানের মতো বেশ কয়েকটি ইস্যু কাজ করছে।
দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, শিক্ষার এত খারাপ অবস্থা আগে কখনই ছিলো না। শিক্ষকদের জোর করে নম্বর দেয়ানো হচ্ছে। খুব কম পরিশ্রম করে বেশী ফল পাওয়ার প্রবনতা কাজ করছে।
বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান বলেন, একটা সময়ে স্কুল কলেজগুলোতে শিক্ষার মান ছিলো না। এখন অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সমন্বিত প্রয়াসে শিক্ষার্থীরা ভালো রেজাল্ট করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি স্কুল-কলেজের পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে একেবারে ভিন্ন। আমাদের উচিত এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করা।
ফখরউদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, বেশী পাশ করিয়ে সরকারের লাভ কি? ম্যাসাকার কিছু হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছি না।
দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিলো- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবী আরো একবার নাকচ করেছেন, যদিও বিভিন্ন জনসভায় জোড়ালোভাবে এই দাবী তুলেছেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। এই অনড় মনোভাব রাজনীতিতে কি সংঘাত অনিবার্য করে তুলছে?
দিলদার হোসেন সেলিম বলেন,এ দাবী নাকচ করার জন্য সরকারকে ফল দিতে হবে। দেশের আশি ভাগ মানুষ নির্বাচন চায়।
বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান বলেন, দেশের মানুষতো শান্তিতে আছে। দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে, তাহলে কেন মধ্যবর্তী নির্বাচন করতে হবে? কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে অন্তর্জালা বিএনপি’র মধ্যে আছে।
জায়েদা শারমিন বলেন, নির্বাচন একটি ব্যয় বহুল বিষয়। একটি নির্বাচন হয়েছে, তা কেউ মেনে নিয়েছে আবার কেউ মেনে নেয়নি।
ফখরউদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, দেশের ৭০ ভাগ মানুষের কামনা উন্নযন।যা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ সংখ্যক লোক নির্বাচিত হয়ে যাওয়া ভালো চোখে দেখে নি। তবে সরকারের উপর জনগণের আস্থা আছে।
তৃতীয় প্রশ্ন ছিলো-জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে যাওয়ার খবর গণমাধ্যম বেরিয়েছে। ব্যাংকগুলোর এই দুরাবস্থার জন্য কাকে দায়ী করা যায়?
উত্তরে ফখরউদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, আমি এর সাথে একমত নই। লিডারশীপ, একাউন্টিং আরো অনেকগুলো বিষয় খেয়াল রাখা দরকার।
বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান বলেন, এটা আমাদের কারো কাম্য নয়। সুনির্দিষ্ট তদন্ত প্রয়োজন। সরকার সঠিক বিবেচনায় একটি লোককে নিয়োগ দেয়। সুনির্দিষ্ট তদন্ত হয়ে অপরাধ প্রমানিত হলে অবশ্যই শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।
দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, এর আগে শেয়ার কেলেংকারির মতো অপরাধের শাস্তি দিলে এমনটা হতো না। একটা অপরাধই আরেকটা অপরাধ জন্ম দেয়।
চতুর্থ প্রশ্ন:প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগে বাঁধা কোথায়?
উত্তরে ফখরউদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, টাইট পলিসিই মূল সমস্যা।
দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, কাঠামোগত সমস্যা আছে।
বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতাই মূল বাঁধা।
এই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে দর্শকরা মতামত প্রকাশ এবং প্রশ্ন করতে পারেন উপস্থিত প্যানেল সদস্যদেরকাছে।
বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন এবং বিবিসি বাংলা’র যৌথ আয়োজনে পরিচালিত অনুষ্ঠানটি ইতিমধ্যে টিভি, রেডিও ও অনলাইনের মাধ্যমে বহু দর্শকের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে ।
অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং উপস্থাপনা করেন আকবর হোসেন।