লেখককে স্রষ্টা ও সৃষ্টি সম্পর্কে জেনে জগত রহস্য উদঘাটন করতে হবে
সিলেটে শরৎকালীন কবিতা উৎসবে কবি আল মাহমুদ
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ আল মাহমুদ ফাউন্ডেশন আয়োজিত শরৎকালীন কবিতা উৎসবে বাংলাদেশের প্রধান কবি ও কথা সাহিত্যিক আল মাহমুদ বলেছেন, মানুষের সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে মনুষ্যবোধ। যেখানে হীনমন্যতা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। কবি-সাহিত্যিকরা মানুষের মন ও মননকে জাগিয়ে তুলেন। যারা সাহিত্যের জন্য প্রাণ উজাড় করেছেন আমি তাদের ভালোবাসি, তাদেরকে অভিনন্দন জানাই। সাহিত্য মানুষকে উদার ও মহৎ করে। কাউকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয় না।
শনিবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ এক্সেলসিয়র সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্টে আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও এক্সেলসিয়র সিলেটের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সাঈদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কবিতা উৎসবে কবি আল মাহমুদ আরো বলেন, ভাল সাহিত্যিক হতে হলে প্রচুর পড়ালেখা করতে হবে। লেখককে স্রষ্টা ও সৃষ্টি সম্পর্কে জেনে জগতের অনেক রহস্য উদঘাটন করতে হবে।
বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াবার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে গল্পের জাদুকর আল মাহমুদ যখন শব্দের জ্ঞাত অর্থের অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে কাব্যরসে সিক্ত করেন উপস্থিত শতাধিক কবি-সাহিত্যিককে, তখন এক্সেলসিয়রের প্রাকৃতিক সুষমা মন্ডিত পরিবেশে তরুন লেখক-লেখিয়েদের উপচে পড়া ভীড়। তারা সকলেই ৮০ বছরের এই প্রবীন কবির কথা শুনছিলেন উন্মুখ হয়ে। কবি বললেন, বিচিত্র এই জগতকে জানতে সবার মধ্যে জ্ঞানার্জনের পিপাসা থাকতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বললেন, পিপাসার অর্থ তৃষ্ণা নয় আরো বেশী কিছু, যেন বুকটা ফেটে যাচ্ছে।
কবি ও আইনজীবী আব্দুল মুকিত অপি’র প্রাণবন্ত পরিচালনায় উৎসবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক পুণ্যভূমি সম্পাদক মুক্তাবিস-উন-নূর, এমসি কলেজের সাবেক অধ্যাপক শিল্পী আজিজুর রহমান লস্কর, দৈনিক জালালাবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আজিজুল হক মানিক, কবি মুকুল চৌধুরী, সময় টুয়েন্টিফোর ডটকমের সিনিয়র রিপোর্টার কবি নিজাম উদ্দিন সালেহ, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহকারী সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল, দৈনিক জালালাবাদের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল কাদের তাপাদার, বিশ্ববাংলা সম্পাদক কবি মুহিত চৌধুরী, প্রবাসী কবি তাদেবার রসুল বকুল প্রমুখ। আল মাহমুদের জীবনী তুলে ধরেন এডভোকেট রফিক আহমদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এক্সেলসিয়র সিলেটের চেয়ারম্যান শাহ জামাল নুরুল হুদা, ডাইরেক্টর আব্দুল লতিফ জেপী ও মার্কেটিং ডাইরেক্টর আহমদ আলী।
কবি আল মাহমুদকে নিবেদিত কবিতা ও কবির বই থেকে আবৃত্তি করেন নাজমুল আনসারী, এডভোকেট জিয়াউর রহীম শাহীন, মাসুদা সিদ্দিকা রুহী, ইশরাক জাহান জেলি, শামীমা কালাম, মিনহাজুর রহমান ফয়সল, মুসা আল হাফিজ, নাঈমা চৌধুরী, জালাল আহমদ জয়, সাহাব উদ্দিন আহমদ প্রমুখ। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সুলায়মান আল মাহমুদ। সঙ্গীত পরিবেশন করেন গণশিল্পী মিছবাহ উদ্দিন ও শালিন আহমদ।
কবিতা উৎসবে উল্লেখযোগ্য লেখক সাংবাদিকদের মধ্যে আরো অংশ গ্রহন করেন খলীলুর রহমান কাশেমী, আব্দুল মালিক জাকা, হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী, এমদাদ হোসেন চৌধুরী দিপু, জাহেদুর রহমান চৌধুরী, জিন্নুরাইন চৌধুরী, এখলাছুর রাহমান, শাহাদাত আলিম, নাজমুল ইসলাম মকবুল, ইছমত হানিফা চৌধুরী, ইলিয়াস উদ্দিন আহমদ, আমেনা শহীদ চৌধুরী মান্না, তাজুল ইসলাম, শাহ সুহেল আহমদ, কামরুজ্জামান হেলাল, এম রহমান ফারুক, এমজেএইচ জামিল, জসীম আল ফাহিম, উম্মে সুমাইয়া চৌধুরী নীলা, তাসলিমা খানম বীথি, শাহ মিজান ইবনে আজিজ, মাহমুদ পারভেজ, মামুন হোসেন বিলাল, রিমা বেগম পপি, জান্নাতুল শুভ্র মনি, বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল, মীম হুসাইন, মীম সুফিয়ান, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, শাহাব উদ্দিন, কানিজ আমেনা কুদ্দুস, লুৎফুর রহমান তোফায়েল, নাসির উদ্দিন, রাফিদুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ মুজাদ্দিদ, আরিফ, আব্দুল কাদের জীবন, রাসেল আহমদ, বদরুল ইসলাম চৌধুরী, মঈন উদ্দিন, আনসার আহমদ, ফয়জুর রহমান, জহিরুল আলম, জাবির আহমদ, আজমল হোসেন প্রমুখ।
আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে সাঈদ চৌধুরী বলেন, আল মাহমুদের মত উঁচু মানের কবি বাংলাদেশে জন্মেছেন এটা আমাদের জন্য গর্বের, আনন্দের। এত বড় মাপের লেখক সবসময় সব দেশে জন্মায়না। তার ব্যাপক সাহিত্য ভান্ডার বিভিন্ন ভাষায় বিশ্বময় ছড়িয়ে দেবার প্রত্যাশা নিয়ে লন্ডনে আল মাহমুদ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সকলের সহায়তায় ঠিকমত কাজটি করতে পারলে আল মাহমুদও বাংলা সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার পেতে পারেন।