মিলান কন্সুলেটে ডিজিটাল পাসপোর্টের চাপ বেশি,লোকবল সংকট
নাজমুল হোসেন,সম্পাদক মিলান বার্তাঃ ইতালির মিলানে কনসুলেট অফিসে ডিজিটাল পাসপোর্টের জন্য প্রবাসীদের চাপ বেড়েই চলছে ,কিন্তু চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ডিজিটাল পাসপোর্টের ফিঙ্গার এর আবেদন নেওয়া হচ্ছে তুলনামূলক অনেক কম। তাই প্রবাসীদের নানান কথা ও কর্ম ব্যস্ততার মধ্যে ডিজিটাল পাসপোর্টের জটিলতায় অনেকেই ভিন্ন ভিন মত পোষণ করে যাচ্ছেন।
তাই গত সপ্তায় সরজমিনে কনসুলেট অফিসে গিয়ে প্রবাসীদের অবগতির জন্য ডিজিটাল পাসপোর্টের কিছু তত্ত্ব আপনাদের জন্য তুলে ধরা হলো ……………
গত ৪ মে ২০১৪ সাল থেকে ইতালির মিলান কনসুলেট অফিসে ডিজিটাল পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ডিজিটাল পাসপোর্টের আবেদন করতে হয় অনলাইনের মাধ্যমে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন ডিজিটাল পাসপোর্টের ফিঙ্গার দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ডিজিটাল পাসপোর্টের ফিঙ্গার নেওয়ার ওয়ার্ক স্টেসন একটা। তাই একজন কর্মকর্তা দিয়েই এই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এম আর পি চারটি পর্যায়ে কাজ হয়ে থাকে। প্রথমে একজন ডিজিটাল পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন ,তারপরে সেই আবেদনের পরিপেক্ষিতে নির্ধারিত একটি দিনে ফিঙ্গার,ছবি ও ডিজিটাল সাক্ষর দেওয়ার সুযোগ পান,তারপরে ফিঙ্গার দেওয়ার পরে পাসপোর্টের অফিসিয়াল প্রস্থুতি গ্রহন করা হয়। সর্ব শেষে সেই পাসপোর্ট টি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ কর্ম দিবসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ বিমান যোগে এই পাসপোর্ট কনসুলেট অফিসে আসে তারপরে নিজ নিজ ব্যক্তির নিকট পাসপোর্ট হস্থান্তর করা হয়। ডিজিটাল পাসপোর্ট নেওয়ার সময় অবশ্যই পুরনো পাসপোর্ট টি সাথে নিয়ে আসতে হবে এবং ডিজিটাল পাসপোর্ট এর সাথে পুরনো পাসপোর্ট টি সংযোগ করে প্রদান হয়।
উলেক্ষ যে একজন ব্যক্তি একবারের অধিক ডিজিটাল পাসপোর্ট করার সুযোগ নাই। তারপরেও যদি কেও ডিজিটাল পাসপোর্ট পুনরায় করতে চান তাইলে অবশ্যই দুতাবাস কে অবহিত করতে হবে ,তা না হলে ডিজিটাল পাসপোর্ট এর প্রস্থুত করতে কিছুটা জটিলতা দেখা দিয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক বিমান বে সামরিক সংস্থা ( আই কাওয়ার ) নির্দেশ অনুযায় নভেম্বর ২০১৫ এর মধ্যে সকল প্রবাসীদের কে ডিজিটাল পাসপোর্ট করার জন্য উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে। মিলান কনসুলেট কর্মকর্তারা ও সকল প্রবাসীদের আহবান করছেন আপনারা সকলেই ধীরে ধীরে হাতের লেখা পাসপোর্ট পরিবর্তন করে একটি ডিজিটাল পাসপোর্ট গ্রহন করার জন্য। ডিজিটাল পাসপোর্ট টি নিরাপদ এবং আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন। ডিজিটাল পাসপোর্ট করতে ভিজিট করুন। …………………..
একটি ১৭ ডিজিটের জন্মসনদ কাগজ নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ,পাসপোর্ট, সৌজন্য ফটো কপি করেই আপনি আবেদন করতে পারবেন। ইতালিয়ান শিশুদের জন্য ৪ ইউরো ফি দিয়ে কমুনের জন্ম সনদের পাশা পাশি কনসুলেট থেকে একটি জন্ম সনদ প্রদান করা হয়। প্রতিদিন গড়ে ৯০ থেকে ১০০ আবেদনকারী আবেদন করে থাকেন কিন্তু যেহেতু একজন কর্মকর্তা ডিজিটাল এর কাজ করেন তাই প্রতিদিন ২০ জনের বেশি আবেদন কারীকে গ্রহণ করা হচ্ছে না। ওয়ার্ক স্টেসন কম থাকায় এর চাইতে বেশি নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান।
মিলান কনসুলেটের কনসাল জেনারেল রেজিনা আহমেদ বলেন,গত তিন মাসে মেশিন রেডিবল পাসপোর্ট ১৩৯৫ পাসপোর্ট ডিজিটাল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫০ টি হস্থান্তর করা হয়েছে আর বাকি গুলো প্রস্থুত হয়ে আসলে প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যে ১০২৫ জনকে ডিজিটাল পাসপোর্টের আবেদনকারীকে ফিঙ্গারের তারিখ ও সময় জানানো হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েক শ আবেদন ইমইলে রয়েছে যেগুলো পরবর্তিতে তাদের তারিখ ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আশা করছেন বর্তমান যে পক্রিয়ায় কাজ চলছে তা করে ২০১৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৭৫ হাজার প্রবাসী ডিজিটাল পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন। তিনি আশা করেন আরো একটি ওয়ার্ক স্টেশন বাড়ালে আরো বেশি করে ডিজিটাল পাসপোর্ট এর কাজ তরান্নিত হবে। যাদের পাসপোর্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ ,কাগজ এর জন্য আবেদন করতে জরুরি প্রয়োজন,বা জরুরি প্রয়োজনে দেশ গমন করতে হচ্ছে তাদের জন্য অল্প মেয়াদে হাতের লেখা পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।
কনসুলেট অফিসে ডিজিটাল ছাড়াও নো ভিসা,নতুন পাসপোর্ট,ন্যাশনাল সার্টিফিকেট,জন্ম সনদ ,হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্ট,ইতালিয়ানদের সাথে সরকারী অনেক কাজ হয়ে থাকে। প্রতিদিন অনেক প্রবাসী এই কনসুলেট অফিসে আসেন কিন্তু অনেকেই অনেক কাজ করতে আসেন যে কাজের কাগজপত্র সঠিক থাকে সেই গুলো খুব সহজেই এবং দ্রুত করে দেওয়া যায় কিন্তু দেখা যায় অনেকের কাগজ পত্রে কিছুটা গরমিল থাকার কারণে আমরা আইনানুগ ভাবে সময় মত কাজ গুলো করে দিতে পারিনা বলেই অনেকে মনে করেন কনসুলেটের কর্মকর্তারা ইচ্ছা করেই তাদের কাজগুলো করছেন না। আসলে অনেকে জানেন না বলেই এমন ধারণা করেন। আমি আশা করব সকল প্রবাসী আমাদের এই মিলানের কনসুলেট অফিস কে সহযোগিতা করবেন এবং আমরা ও খুব দ্রুত সঠিক সময়ে প্রবাসীদের কাজ গুলো করে দিতে পারব।
আলাপকালে মিলান কনসুলেটের কাউন্সিলর নাফিসা মনসুর,কাউন্সিলর এসিস্টেন্ট শেখ মোক্তার আহমেদ,কনসুলেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম,সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুবীর চন্দ্র সরকার,কনসাল স্টাফ নাসরিন সুলতানা ও জাকির হোসেন কর্মরত ছিলেন। সাথে সহকর্মী এটিএন বাংলা ইউকের মিলান প্রতিনিধি একে রুহুল সান ছিলেন।