মুজিব-সোহেলকে নিয়ে সনাক্তরণ অভিযানে পুলিশ
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান মুজিব ও তার গাড়িচালক রেজাউল হক সোহেলকে নিয়ে সনাক্তকরণ অভিযান ও অপহরণের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে নেমেছে পুলিশ।
এ লক্ষ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেমায়েতুল ইসলাম মুজিবকে নিয়ে দুপুর সোয়া ১২টায় সিলেটের উদ্দেশ্য সুনামগঞ্জ ছেড়েছেন। প্রথমে তাকে নিয়ে সিলেটের টুকেরবাজার যাওয়ার কথা। মুজিব পুলিশকে বলেছেন, সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
এ তথ্য জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুনুর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘জবানবন্দি নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার তাদের সুনামগঞ্জ জেলা আদালতে তোলার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে। তার বদলে তাদের নিয়ে ‘সনাক্তকরণ অভিযান’ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
এর আগে বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেমায়েতুল ইসলামের নেতৃত্বে বিশেষ পাহাড়ায় মুজিবুর রহমান মুজিব ও রেজাউল হক সোহেলকে সুনামগঞ্জে নেওয়া হয়। মুজিবকে একটি মাইক্রোবাসে করে এবং সোহেলকে নেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
রাতে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পৌঁছে সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মুজিব বলেন, ‘সকলের চেষ্টা ও দোয়ায় আমি ফিরে এসেছি।’
বুধবার রাতে মুজিবকে সুনামগঞ্জে নিয়ে আসার পর পুলিশ সুপারের অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার হাজিপাড়ার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশের নজরদারীতে ছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পূর্বে মুজিবকে দেখতে তার বাসায় যান জেলা বিএনপির আহবায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী ও প্রথম সদস্য কলিম উদ্দিন মিলন। পরে কলিম উদ্দিন মিলনের গাড়িতে করে মুজিবকে পুলিশ সুপারের অফিসে নিয়ে আসা হয়।
এসময় নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে মুজিবকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত পেয়েছি। এ সময় মিলন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।’
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার হারুনুর রশীদ তার অফিসে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ঘটনাস্থলগুলো মুজিবকে নিয়ে পরিদর্শনের পর দু’-এক দিনের মধ্যে তাকে আদালতে তোলা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পলিশ সুপার বলেন, মুজিবুর ও গাড়ি চালক সোহেলকে পৃথক স্থানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের দু’ জনের দেয়া তথ্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক পরিলক্ষিত হয়েছে।
মুজিব অপহরণ হয়েছেন- তার এই দাবীর সত্যতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আপতদৃষ্টিতে অনেকগুলো বিষয়ই রহস্যজনক মনে হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৪ মে সুনামগঞ্জ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে মুজিব ও তার গাড়িচালক সোহেলকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গত সোমবার সকালে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় তাদের চোখবাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়।
ওই রাতেই তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ।