চৌধুরী মমতাজ গ্রেফতার : সাংবাদিকদের থানা ঘেরাও : নগরীতে মিছিল
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটের বিশিষ্ট সাংবাদিক চৌধুরী মমতাজ আহমদ (মম) কে একটি নারী নির্যাতন মামলায় আটক করেছে সিলেট কোতোয়ালী থানা পুলিশ। প্রবীন সাংবাদিক মমতাজকে আটকের প্রতিবাদে সিলেট কতোয়ালী মডেল থানা ঘেরাও করে রাখেন সিলেটের কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা। থানা ঘেরাও শেষে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাংবাদিকরা। পরে নগরীতে সমাবেশও করেন সাংবাদিকেরা। সমাবেশে সিলেট জেলা প্রেসক্লাব, সিলেট প্রেসক্লাব, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসাসিয়েশন, টেলিভিশন সাংবাদিক ইউনিয়ন, রিপোর্টার্স ইউনিটি, সাংবাদিক ইউনিয়ন, সিলেট অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক কমিশনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। রাত সাড়ে ৮টায় সিলেটের বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক ও সর্বস্তরের সাংবাদিকদের নিয়ে জরুরী সাংবাদিক সমাবেশ শুরু হয়। এতে অবিলম্বে সাংবাদিক মুমতাজের মুক্তি ও তাঁর মুক্তির দাবিতে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থানা এলাকায় অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নগরীর শেখঘাট এলাকা থেকে আমীন হোসেন নামে এক বন্ধুসহ প্রবীন সাংবাদিক চৌধুরী মমতাজ আহমদকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, কোতয়ালী মডেল থানার সহকারী কমিশনার (এসি) সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে একদল সাদা পোশাকধারী তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নেওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে এক যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার রহমত উল্যাহর দাবি, একজন নারীকে জিম্মি করে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে চৌধুরী মুমতাজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগ তোলায় মুমতাজকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের অভিযোগ, সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকায় পুলিশের দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেন চৌধুরী মুমতাজ। এসব প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ একটি সাজানো ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করেছে। জানা গেছে, সিলেট শহরতলী এলাকার আমিন উদ্দিন কিছুদিন আগে তানিয়া ইসলাম মণি নামে এক তরুণীর জন্য চৌধুরী মুমতাজের কাছে একটি চাকরি চান। গতকাল সকালে চৌধুরী মুমতাজ আহমদ মামলা সংক্রান্ত কাজে সিলেটের আদালতে যান। এসময় আমিন উদ্দিন তাকে ফোন করে বলেন মণি কাগজপত্র নিয়ে এসেছে। পরক্ষণে মণিও তাকে ফোন দেয়। চৌধুরী মুমতাজ আদালতের কাজ সেরে আমিন উদ্দিনের বাসার ফটকের কাছে আসেন। সেখানে আসার পরই সাজানো পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই মেয়েটি চিৎকার শুরু করে। এ সময় আগে থেকে সেখানে থাকা সাদা পোশাকের পুলিশের একটি দল চৌধুরী মুমতাজ আহমদ ও আমিন উদ্দিনকে আটক করে। পরে টহলে থাকা পুলিশ গিয়ে তাদের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার পর চৌধুরী মুমতাজ আহমদ থানায় সাংবাদিকদের জানান, তিনি ঘটনার কিছুই জানেন না। আমিন উদ্দিনের বাসার ফটকের কাছে যাওয়া মাত্র মেয়েটি চিৎকার শুরু করে। আর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে তিনি সহ আমিন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে জানান, চৌধুরী মুমতাজ আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সহ তার বন্ধু আমিন উদ্দিনকে একটি ধর্ষন মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী তানিয়া ইসলাম মণি। মামলা নং ২৬, তারিখ ১৯/০৮/২০১৪।