অকারনে জকিগঞ্জের ২ যুবক কারাবাসে
জকিগঞ্জ প্রতিনিধি: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) সদস্যদের রোষানলে পড়ে মাদক ব্যবসায় জড়িত না থাকলেও মিথ্যা মামলায় অকারনে কারাভোগ করছেন জকিগঞ্জের দুই নিরিহ যুবক। গত ১১ জুলাই রাতে মানিকপুর বিজিবি ফাড়ির সদস্যদের হাতে আটক হন মানিকপুর গ্রামের আয়াজ আলীর পুত্র আবু তাহের (২২) ও মনজ্জির আলীর পুত্র বাখরশাল গ্রামের নাজু আহমদ (১৬)।
সরেজমিন গিয়ে জানাযায়, গত ১১ জুলাই স্থানীয় মানিকপুর (বাখরশাল) গ্রামের দুই যুবককে বেড়ি বাধের উপর থেকে আটক করে মানিকপর বিজিবি ফাড়ির জোয়ানরা। আটকের সংবাদশুনে তাৎক্ষনিকভাবে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাছান আহমদ ও শামছুদ্দিন কাজলসহ এলাকার বিশিষ্টজনেরা বিজিবি ক্যাম্পে উপস্থিত হয়ে সুবেদার আব্দুর রাজ্জাকের কাছে আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন রাতের বেলা কুশিয়ারা নদীর বেড়ি বাধের উপর দিয়া চলাফেরার কারণে তাদেরকে সন্দেহমূলকভাবে আটক করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত দু’জন জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। স্থানীয়দের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সুবেদার আব্দুর রাজ্জাক এসময় ইউপি সদস্যদের জানান আটকৃতদেরকে ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পরদিন সকালে ছেড়ে দেয়া হবে। পরদিন সকাল অনুমান ১০টায় ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সুবেদার আব্দুর রাজ্জাককে জানান আটককৃতরা ভালো লোক হিসেবে তিনি তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারনে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় হাজারো জনতার অনুরোধ উপেক্ষা করে আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ আবু তাহের ও নাজুকে আটক দেখিয়ে সুবেদার আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় দুই যুবক গত এক মাস থেকে কারাবন্ধী রয়েছে।
এ প্রতিবেদককে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার মানুষ জানান, আবু তাহের ও নাজু আহমদ কোন অবস্থাতেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলনা । একটি পক্ষের কাছ থেকে মানিকপুর বিজিবি ফাড়ির নায়েক সুবেদার আব্দুর রাজ্জাক মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদেরকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন। সুবেদার আব্দুর রাজ্জাকের রোষানলে পড়ে মিথ্যা মাদক মামলায় নিরীহ দুই যুবক কারাভোগ করছে। এলাকাবাসী এই মিথ্যা মাদক মামলা থেকে দুই যুবকের অব্যাহতির ও নায়েক সুবেদার আব্দুর রাজ্জাকের বিচার দাবি করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদের সুপারিশ নিয়ে আটক আবু তাহেরের ভাই আব্দুল কুদ্দুছ, স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ড সদস্য হাছান আহমদ, ৬নং ওয়ার্ড সদস্য শামছুদ্দিন কাজল, ৭নং ওয়ার্ড সদস্য বেলাল আহমদ রানাসহ এলাকার লোকজন বিজিবির মহা-পরিচালক, সেক্টর কমান্ডার সিলেট সদর দপ্তর, সিলেটের পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার জকিগঞ্জ সার্কেল বরাবরে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি ও প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে ৪১ বি-কোম্পানীর মানিকপুর সীমান্ত ফাঁড়ির সুবেদার আব্দুর রাজ্জাক বলেন ঘটনার দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভারত থেকে সাঁতার কেটে ফেনসিডিল নিয়ে আসার খবর পেয়ে আমি ও সঙ্গীয় সিপাহীসহ বেড়ি বাধের উপর থেকে তাদেরকে আটক করি। আটকের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থানায় মামলা দায়ের করি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার এসআই মোঃ আলী খানের সাথে বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।