দীর্ঘ ৬ বছর পর বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নে শান্তিপুর্ণ নির্বাচন

sylhet-2মধু চৌবে, শ্রীমঙ্গল থেকেঃ দীর্ঘ ৬ বছর পর বাংলাদেশের বৃহৎ ট্রেড ইউনিয়ন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন শান্তিপুর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি সহ পাঁচ জেলার ২০ উপজেলার সর্বমোট ২২৮ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট চলাকালিন সময়ে কোন অভিযোগ বা কোথাও কোন অপৃথিকর কোন ঘটনার বা আইন শৃংখলার অবণতির কোন খবর পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে পরিদর্শন করে দেখা যায় চা শ্রমিক ভোটাররা সারিবদ্ধ ভাবে লাইনে দাড়িয়ে তাদের যোগ্যপ্রার্থিকে ভোটা প্রয়োগ করছেন।

এর আগে রবিবার সকালে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ চা শিল্প শ্রমকল্যাণ বিভাগের উপ-শ্রম বিষয়ক পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দিন।
তিনি আরো জানান, নির্বাচনে সিলেট ও চট্টগ্রাম সহ পাঁচ জেলার আওতাধীন মোট ২০ উপজেলার সম্পৃক্ততা থাকায় এসব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন এবং ওই পাঁচ জেলার পাঁচ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। আর সবকিছু মনিটরিং করেন শ্রম অধিদপ্তরের যুগ্ন পরিচালক ও সাঁত সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিটির প্রধান এস এম আশফাকুজ্জামান ।
এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক পদে শ্রমিক ইউনিয়নের দুটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে। চা শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে সভাপতি পদে মাখন লাল কর্মকার ও সাধারণ সম্পাদক পদে রাম ভজন কৈরী এবং চা শ্রমিক গণঐক্য পরিষদের ব্যানারে সভাপতি পদে বিজয় বুনার্জী ও সাধারণ সম্পাদক পদে সীতারাম অলমিক প্রতিযোগিতা করছেন। নির্বাচনে তিন ধরনের ব্যালটের মাধ্যমে মোট ৯৪ হাজার ৫৮৩ চা শ্রমিকের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন পঞ্চায়েত কার্যকরী কমিটি, ভ্যালি কার্যকরী কমিটি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি।
চা শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে সাধারণ সম্পাদক পদে রাম ভজন কৈরী এ প্রতিনিধিকে জানান, ভোট শান্তিপুর্ণভাবে সম্পর্ন্ন হয়েছে। ভোটের শেষ পর্যায়ে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত কোথাও কোন অনিয়ম বা গোলযোগের খবর পননি বলে জানান।
চা শ্রমিক গণঐক্য পরিষদের ব্যানারে সভাপতি পদে বিজয় বুনার্জী জানান,ভোট মোটামুটি শান্তিপুর্ণ ভাবেই হয়েছে। শ্রীমঙ্গলের খেজুরীছড়াতে সামন্য সমস্যা হয়েছিল বলে শুনেছিলে তবে তাতক্ষনিক সমাধান হয়েছে বলে তিনি জানান।

সাত সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিটির প্রধান শ্রম পরিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক এসএম আশফাকুজ্জামান জানান, নির্বাচন শান্তিপুর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোন অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনের জন্য স্থাপিত কন্টোল রুম থেকেও জানানো হয় নির্বাচনের শেষ সময় পর্যন্ত কোন পক্ষ বা প্রার্থি কোন অভিযোগ দেননি। তিনি আরো জানান নির্বাচন খুব শান্তিপুর্ণ ভাবে হয়েছে।
উল্যেখ্য,সর্বশেষ ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিজয় বুনার্জি গ্র“প নির্বাচনে পরাজিত হলে ইউনিয়নের গঠনতন্তের ফাঁকফোঁকরের কারনে কোর্টে মামলা মাধ্যমে নির্বাচিত বিজয়ী মাখন লাল কর্মকার গ্রুপ কার্যালয়ের দ্বায়িত্ব থেকে বর্জিত হন এবং দুই গ্র“পের মধ্যে বিভাজন সৃুষ্টি হয়। দীর্ঘ ৬ বছর পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।