শমসের মবিন চৌধুরী বেইমান : প্রধানমন্ত্রী
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীকে ‘বেইমান’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শমসের মবিন চৌধুরীকে বঙ্গবন্ধু জার্মানিতে পাঠিয়ে চিকিত্সা করিয়েছিলেন। অথচ তিনিই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসনে সহায়তা করেছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচি ও আলোচনা সভায় বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে পুনর্বাসন করে। ওই দায়িত্ব পড়ে আজকের শমসের মবিন চৌধুরীর ওপর। তাকে বঙ্গবন্ধু জার্মানিতে চিকিত্সার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু বেইমান চিরকালই বেইমান। এটা হয়তো অনেকে জানেন না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়া ক্ষমতায় এসে ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধীতে ছেড়ে দেয়। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের প্রদেশ বানানোর ষড়যন্ত্র শুরু করে। কিন্তু রক্ত দিয়ে যে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তাদের কেউ দাবিতেদ রাখতে পারে না। ২১ বছর তারা সত্য ইতিহাসকে তারা চেপে রেখেছিল।’
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের খুনিদের মধ্যে যারা বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে আছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে বলেও জানান তিনি।১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান তাকে দেশে আসতে বাধা দিয়েছিল দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মৃত্যুকে পরোয়া করি না। এ জন্য দেশে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নই আমার লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ছিলাম দেশের বাইরে স্বামীর কর্মস্থলে। ঘরভর্তি মানুষ রেখে বিদায় নিয়েছিলাম। কিন্তু এসে বিমানবন্দরে লাখ লাখ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। কিন্তু আমার পরিবারের কাউকে পেলাম না।’
এসব কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী বারবার অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এই বাড়িতে আমরা মিলাদ পড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু জিয়া অনুমতি দেয়নি। রাস্তার ওপর মিলাদ পড়েছি। এটা বাস্তব সত্য কথা। কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসেনি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আর রেহানার কথা ভেবে দেখেন। আমরা সবাইকে হারিয়েছি। আমরা শোকে কাতর হয়েছি। কিন্তু ভেঙে পড়িনি। যাদের মুক্তির জন্য আমার মা-বাবা সবাই জীবন দিল তাদের মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জাতির পিতা দেশ গড়েছেন, আমি সেটাই বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছি। মহৎ অর্জনের জন্য প্রয়োজন মহান ত্যাগ স্বীকার। আমি যে কোনো ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। সেটা অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করব।’
তিনি বলেন, ‘১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের পাশে না পেলে এভাবে দেশের উন্নতি করতে পারতাম না। কোনো আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না, বৃথা যাবে না। এখনো বড় বড় জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এগিয়ে যাব। বঙ্গবন্ধু তোমাকে কথা দিলাম, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা, সহসভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।