টাওয়ার হ্যামলেটসে ফিলিস্তিনের পতাকা : আবারও আলোচনায় মেয়র লুৎফুর

টাওয়ার হ্যামলেটস নগর ভবনে উড়ছে ফিলিস্তিনী পতাকা ছবি-সুফি সুহেল আহমদ
টাওয়ার হ্যামলেটস নগর ভবনে উড়ছে ফিলিস্তিনী পতাকা ছবি-সুফি সুহেল আহমদ

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ব্রিটেনের গণমাধ্যমে আবারও শিরোনাম হয়ে আলোড়ন তুলেছেন টাওয়ার হ্যামলেটস এর মেয়র লুৎফুর রহমান । তবে এবার ভোটের ক্ষেত্রে নয়। একজন মুসলমান মেয়র হয়ে টাওয়ার হ্যামলেটস নগর ভবনে প্যালেস্টাইনের ফ্ল্যাগ উড়িয়ে প্যালেস্টাইনের মুসলমানদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে সমগ্র ব্রিটেন ও ইউরোপে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান বর্বরতা ও বোমাবাজির প্রতিবাদে সারা বিশ্বের মুসলিম অমুসলিম। মানবতাবাদী সকল নাগরিক আজ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সোচ্চার। বিশ্ব বিবেক এই প্রথমবারের মতো এক কাতারে এসে একই আওয়াজ তুলছে- এখনি ইসরায়েলকে সিজ ফায়ার করতে হবে। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাও ইসরায়েলের এই বর্বর হামলা এখনি বন্ধের দাবী জানিয়েছেন।লন্ডনে গত সপ্তাহে হাজার হাজার নারী পুরুষ ইসরায়েল এম্বাসী ঘেরাও করে গাজার জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশের সাথে এখনি সিজ ফায়ারের দাবীতে রাজপথ কাপিয়ে তুলেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী বাঙালি মুসলিম মেয়র লুতফুর রহমান নগর ভবনে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে ফিলিস্তিনের মুসলমান ভাইবোনদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। আর লুতফুর রহমানের এমন অভিনব সংহতি প্রকাশে ব্রিটেনের মূলধারার মিডিয়া সহ রাজনীতি ও অন্দর মহলে ব্যাপক হৈ চৈ পড়ে যায়। প্রধান প্রধান দৈনিকগুলোর অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় লুতফুর রহমানকে একজন মুসলিম মেয়র হিসেবে ফিলিস্তিনের পতাকা নগর ভবনে উড়ানোকে কেন্দ্র করে পক্ষে বিপক্ষের মতামত নিয়ে লিড সংবাদ প্রকাশ করতে দেখা গেছে, যার রেশ এখনো চলছে।

শ্বেতাঙ্গ এবং কিছু কিছু মানবতাবাদী গ্রুপ সহ লেবার ও কনজারভেটিভ অনেকেই লুতফুর রহমানের ফিলিস্তিনী পতাকা নগর ভবনে উড়ানোকে সহজভাবে নেয়নি। কেউ কেউ লুতফুর রহমানের পতাকা উড়ানোর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে টুইট করেছেন। আবার অনেকেই বলছেন নগর ভবনের কাজের সাথে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে সংহতি প্রকাশের কোন ব্যাপার আছে কিনা- এমনও প্রশ্ন তুলেছেন।
লুতফুর রহমানের বিরোধী শক্তিশালী লেবার দলের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিন আগে যেখানে হাইকোর্ট লুতফুর রহমানের নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির পিটিশন গ্রহণ করেছেন- তা থেকে দৃষ্টি অন্যত্র ফিরিয়ে নিয়ে সমগ্র আইনি বিষয়টিকে মুসলমান ইস্যুতে জায়োনিষ্ট বিরোধী প্রচারণা কাজে লাগিয়ে হাইকোর্টের অবস্থান প্রকারান্তরে প্রশ্নবিদ্ধ করে অতি রাজনৈতিক কৌশলী এক চাল হিসেবে তারা দেখছেন। তাদের মতে, হাইকোর্টে লুতফুর রহমান হেরে গেলে কিংবা অভিযুক্ত হয়ে গেলে মেয়র পোষ্ট হারাবেন। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি লেবারের কেন্ডিটেড মেয়র হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তারা সেইসব বিবেচনায় লুতফুর রহমানের প্যালেষ্টাইনী পতাকা উড়ানোকে দেখছেন।
আবার লুতফুর রহমানের সমর্থকরা এটাকে লুতফুর রহমানের মুসলমানদের প্রতি মহানুভবতা ও ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সহানুভূতি আর সেই সাথে মুসলিম উম্মাহর এক নয়া নেতার মতো দায়িত্ব পালন হিসেবেই দেখছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট মেম্বাররাও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জানতে চেয়েছেন প্রকৃত উদ্দেশ্য কি ?
সব মিলিয়ে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মেয়র লুতফুর রহমান লন্ডনে ও ইউরোপে এখন বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। আলোচনা সমালোচনা আর সামনে হাইকোর্টে তার নির্বাচনী ভোট জালিয়াতির পিটিশনের কমিশন গঠন ও শুনানি শেষ পর্যন্ত তাকে কোথায় নিয়ে যায় সেটাই এখন টক অব দ্য টাউন।(সংগৃহীত)