করিম হত্যা মামলার বাদীনির স্বামী আটক ! : এসআই শাকুর ধরাছোঁয়ার বাইরে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ হত্যাকান্ডের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও জকিগঞ্জের স্কুল শিক্ষক আব্দুল করিম হত্যাকান্ডের মূল আসামীদেরকে পুলিশ গ্রেফতার না করলেও মামলার বাদীর স্বামী ফাহিম উদ্দিনকে বুধবার আটক করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। বিষয়টি বৃহস্পতিবার উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও জোরালোভাবে আলোচিত হয়েছে।
এলাকাবাসীর ধারণা মামলার মূল আসামী দারোগা শাকুর ও তার ভাই আব্দুর রহিমকে বাচাঁনোর জন্যই মামলার আসামী না হওয়া সত্ত্বেও সহজ সরল প্রকৃতির ফাহিমকে আটক করে বাদীর উপর চাপ সৃষ্টি করছে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামী করিমের ভাই আব্দুর রহিম প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দ্বিতীয় আসামী ছাত্র শিবিরের এক সময়ের ক্যাডার দারোগা শাকুর আহমদ দিব্যি কাজ করছেন সিলেট বিমানবন্দর থানায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত দেলোয়ার হোসেন ২ নং আসামীর কর্মস্থল সিলেট বিমানবন্দর থানায় গিয়ে আসামীর সাথে দেখা করে এসেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশকে বাঁচাতে পুলিশ চেষ্টা করছে নানাভাবে, চলছে বড় অংকের টাকার খেলাও। ৯ জুলাই বুধবার হাত পা ভেঙ্গে মধ্যযুগীয় বর্বরতায় নিজ বাড়ীতে ঘুমন্ত অবস্থায় আপন দুই ভাই সম্পত্তি ও ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা টাকা আ সাতের লোভে নির্মমভাবে হত্যা করে চিরকুমার করিমকে। হত্যাকান্ডটি ধামাচাপা দিতে আব্দুল করিম হৃদরোগে মারা গেছেন প্রচার করে এলাকার মানুষকে লাশ দেখার সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয় তাকে।
পরদিন পত্র পত্রিকায় বিষয়টি ছাপা হলে পুলিশ শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে করিমের রক্তমাখা জামা উদ্ধার করে। ঐ রাতেই ফাহিম উদ্দিনের স্ত্রী রোজিনা বেগমকে বাদী দেখিয়ে দারোগা শাকুরসহ পাঁচজনকে আসামী করে জকিগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড হয়। হত্যাকান্ডের ১৩ দিন পর ২৩ জুলাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেত টিটন খীসার উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। লাশের বাস্তবচিত্র দেখে উপস্থিত জনতা হতভম্ব হয়। আপন ভাইয়েরা কতটা পাষন্ড ও নির্দয় হলে একটা জীবন্ত মানুষকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে, ভেঙ্গে হত্যা করতে পারে। পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনেও ওঠে এসেছে সে নির্মমতার চিত্র।
শিক্ষকরা শহরে মানববন্ধন করে জকিগঞ্জ থানার ওসি জামসেদ আলমের সাথে দেখা করে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবী জানান। তখন ওসি বলেন বিভাগীয় অনুমতি ছাড়া শাকুর আহমদকে গ্রেফতার করা যাবে না। হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে ২৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে সম্প্রতি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, তার ধারণা আসামী দারোগা শাকুরকে রেহাই দিতে বিভিন্নভাবে তৎপর রয়েছে পুলিশ। এরই অংশ হিসাবে মূল আসামীদেরকে গ্রেফতার না করে হাবাগোবা প্রকৃতির ফাহিমকে আটক করে তার স্ত্রী মামলার বাদীনী রোজিনা বেগমের উপর চাপ সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে পুলিশ। মূল আসামীদের গ্রেফতার না করলে ঈদের পর ছাত্র শিক্ষক ও এলাকাবাসী আন্দোলনে নামবে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আব্দুস সাত্তার জানান, মামলার বাদী রোজিনাকে দারোগা শাকুর বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছেন। বিষয়টি তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছেন।