বিশ্বনাথে মিরাশের অপহরণ নাটক : অতঃপর আটক

mirashবিশ্বনাথ প্রতিনিধি: মিরাশ আলী মারুফ। গত ৬ জুলাই ‘নিখোঁজ’ হন। দুপুরে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলে আর বাসায় ফেরেননি। ‘নিখোঁজের’ ঘটনায় ভগ্নিপতি মো. সালিকুর রহমান থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। যার নং ২২২। তারিখ ৭ জুলাই। মিরাশ আলী মারুফ (২৮) উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সিঙ্গেরকাছ কাজিরগাঁও গ্রামের আইরম আলী পুত্র। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের পুরানবাজার ‘আরফিজ ভিলা’য় বসবাস করে আসছে। মিরাশ আলী মারুফ নিজে আত্মগোপনে থেকে একটি অপহরন নাটকের মাধ্যমে তার পরিবারকে নয় পুলিশ বিভাগকে উপযুক্ত ভাবে হয়রানী করায় এবং দুরভিসন্ধিমূলক আচরন গুরুত্বর কোনো অপরাধের সহিত সম্পৃক্ত থাকিতে পারে মর্মে সংগত কারনেই বিশ্বাস হওয়ায় তাকে বিশ্বনাথ থানার জিডি নং-৪১২। তারিখ-১৩ জুলাই ধারা-কাঃ বিঃ ৫৪ মূলে গ্রেফতার করে গতকাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
জানাগেছে, বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক হওয়ায় বিস্তারিত বিবরণ উল্লেক পূর্বক বিশ্বনাথ থানা পুলিশ দেশের সকল থানায় জরুরী বার্তা প্রেরণ করে ছবিসহ সিআইডি’র ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স গেজেটে প্রকাশনার ব্যবস্থা গ্রহন করে। পাশাপাশি পুলিশের সকল প্রযুক্তি ব্যবহার অব্যাহত রেখে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বৃন্দের সহায়তা/কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ওই সময়ে উক্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এরপর গত ৯ জুলাই (০১৭৯৮ ৪৬৬১৯৩) থেকে মিরাশের বোন আফরোজা বেগমের ফোন নাম্বারে নগদ ২ লাখ টাকা মিরাশের নিজের একাউন্টে জমা দেওয়ার জন্য অজ্ঞাতনামা কন্ঠ থেকে বলা হয়। নতুবা (কথিত ভিকটিম) হত্যা করার হুমকি প্রদান করে। এরপর ভিকটিমের বোন ১০ জুলাই ব্র্যাক ব্যাংক, বিশ্বনাথ শাখায় তার (ভিকটিম) একাউন্ট নাম্বার-৬৩০৪২০২৭১১৬৬২০০১ তে নগদ ১ লাখ টাকা জমা দিলে ওই দিন ঢাকার বিজয় নগর ও তোপখানা রোড শাখার এটিএম বুথ থেকে কথিত ভিকটিম মিরাশ আলী মারুফ নিজে টাকা উত্তোলন করে। যা সংশ্লিষ্ঠ বুথের সিসি ক্যামেরায় ধারনকৃত তথ্যে প্রমান আছে।
প্রয়োজনীয় টাকা পরিবার থেকে অপহরন নাটকের মাধ্যমে উত্তোলন শেষে কথিত ভিকটিম মিরাশ আলী মারুফ বাড়ীতে এসে হাজির হয়। তখন তাকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পুলিশ কে স্বীকার করে, ঢাকার বর্ণিত ব্র্যাক ব্যাংকের বুথ থেকে সে নিজেই বোনের পাঠানো ১ লাখ টাকা উত্তোলন করে এবং কেহ অপহরন করে না বা মুক্তিপনের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। অজ্ঞাতনামা সহযোগী অপরাধীরা পরষ্পর যোগসাজসে পরিকল্পিতভাবে এই অপহরন নাটক সাজানো হয়েছে বলে অনেকেই ধারনা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি নারায়নগঞ্জের অপহরন পূর্বক ৭ খুন এবং বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রেজওয়ানা হাসানের স্বামী-আবু বক্কর সিদ্দিকীর অপহরন ঘটনার পর এসব ঘটনা কে পুঁজি করে কোনো একটি চক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের কিছু সাজানো ঘটনার সৃষ্টি করিয়া আসছে। ফলে রাষ্ট্র ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশে-বিদেশে ও বিভিন্ন সংস্থার নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।