নগরীতে রাজমিন্ত্রীকে কুপিয়ে খুন : কলেজ ছাত্রী অপহরণ!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ নগরীর আখালিয়ার কালিবাড়ি এলাকায় ছুরিকাঘাতে এক যুবককে খুন হয়েছেন। নিহত মো. আবদুল্ল ওরফে কচি (২০) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। কচি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের সঞ্জু মিয়ার ছেলে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ছাত্রলীগের স্থানীয় আনফর গ্রুপের কর্মীরা তাকে ছুরিকাঘাতে খুন করে বলে জানা গেছে। ওই সময় সনি নামের এক কর্মী আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জালালাবাদ থানার ওসি গৌছুল হোসেন জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, মদিনা মার্কেটের কালি বাড়ী রোডে সম্প্রতি টমটমের নতুন স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে। স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান ও গুলজার আহমদের মধ্যে বিরোধ চলছে। গত রাত ঐ বিরোধের জের ধরে ইমরান গ্রুপের কর্মীরা কচি ও তার সহকর্মী নোয়াপাড়ার বাসিন্দা সানির উপর হামলা করা হয়। আশংকাজনকভাবে কচিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নগরীতে মদন মোহন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহৃত নাসরিন আক্তার মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের আব্দুলমোত্তালিবের মেয়ে। প্রত্যদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে কলেজ যাওয়ার পথে দাড়িয়াপাড়াস্থ মেঘনা বি-৩০ বাসার সামনে থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। নাসরিনসহ তার সহপাঠীরা বাসার সামনে রিক্শার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
এমন সময় ওই বাসার ভাড়াটিয়া বাবুসহ ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত নাসরিনকে জোরপূর্বক একটি সিএনজি অটোরিকশায় (সিলেট-থ-১২-৭৪৯৫) তুলে নেয়। কিছু দূর যাওয়ার পর একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে নাসরিনকে টেনে হিঁচড়ে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। জানা যায়, নাসরিন আক্তার মদন মোহন কলেজে লেখাপড়ার করার সুবাদে তিনি সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়াস্থ মেঘনা বি/৩০ নং বাসায় বসবাস করতেন। ৫ তলা বিশিষ্ট বাসায় ৫ম তলায় নসরিনসহ ৪ জন ছাত্রী মেস করে থাকতেন। সোমবার সকাল ৯টায় পরীক্ষা দেয়ার জন্য নাসরিন ও তার মেসের আরেকজন ছাত্রী বাসা থেকে বের হন। ঠিক ওই সময় বাসার নিচে একটি সিএনজিতে ৪-৫ জন যুবক ছিল। নাসরিন ও তার ক্লাসমেট বাসার নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে সিএনজিতে থাকা যুবকরা নাসরিনকে টেনেহিঁচড়ে সিএনজিতে তুলে নেয়। এরপর কিছু দূরে রাখা একটি মাইক্রোবাসে করে নাসরিনকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় নাসরিনের সঙ্গে থাকা ছাত্রী সিএনজির নাম্বার লক্ষ্য করেন। তিনি জানান, সিএনজিটির নাম্বার হলো- ট-১২-৭৪৯৫। এদিকে নাসরিনের অপহরনের খবর পেয়ে সোমবার বিকালে গণমাধ্যম কর্মীরা দাড়িয়াপাড়াস্থ ওই বাসায় গেলে বাসার মালিক বশির মিয়া তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
নাসরিনের ভাই সেলিম আহমদ জানান, সকালে তার বোনকে অপহরণ করা হলেও দুপুরে জানতে পেরেছেন। এ ব্যাপারে তিনি থাকায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। তিনি বলেন, বাসার মালিক বশির মিয়ার সহযোগিতায় বাবুসহ দুর্বৃত্তরা তার বোন নাসরিনকে অপহরন করেছে। কলেজ ছাত্রীকে জোর করে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ মেঘনা বি-৩০ বাসার মালিক বশির আহমদ বলেন, ‘ঘটনাটি অপহরণ নয়, আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের কতোয়ালি থানার লামবাবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) সিরাজুল ইসলাম বলেন, মদন মোহন কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল তাকে ফোনে ঘটনাটি জানান। তবে অপহরণের স্থানএমসি কলেজের সামনে বলায় এবং ওই এলাকা কতোয়ালির আওতায় না থাকায় পুলিশ সন্ধিহান ছিল। বিকেলে জানতে পারে ঘটনাস্থল কতোয়ালি এলাকায়। এরপরই তিনি এএসআই ভুপেন দেবনাথকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পাঠান। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, অপহরণ নয়, কলেজ ছাত্রী নাসরিন নিখোঁজের ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। তবে, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন।