লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর খাস কালেকশন নিয়ে পৃথক ৩টি অভিযোগ
কানাইঘাট প্রতিনিধি: ভূমি মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সকল বিধি লঙ্ঘন করে কানাইঘাট লোভছড়া পাথর কোয়ারী খাস কালেকশনের জন্য সাপ্তাহিক লীজ দেওয়ার অভিযোগ এনে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ ব্যুারোর পরিচালক বরাবরে ২টি এবং সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে পৃথক ৩টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের দরখাস্তকারী যথাক্রমে এলাকাবাসীর পক্ষে সেলিম আহমদ চৌধুরী ও পাথর ব্যবসায়ীদের পক্ষে আলমগীর হোসেন পৃথক ৩টি অভিযোগ দেন। অভিযোগে দরখাস্তকারীরা উল্লেখ করেছেন, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সকল বিধিবিধান লঙ্ঘন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লোভাছড়া পাথর মহালের খাস কালেকশন প্রশাসন কর্তৃক না করে গত ৮/৬/২০১৪ইং তার নিজস্ব কার্যালয়ে এক সপ্তাহের জন্য সর্বোচ্চ ৬লক্ষ ৯০হাজার টাকা পরবর্তীতে ১৭/৬/২০১৪ইং তারিখে ১৫দিনের জন্য কোয়ারী থেকে খাস কালেকশনের জন্য ২৩লক্ষ ৫০হাজার টাকা পাথর কোয়ারীর ইজারা প্রদান করেন। কিন্তু খাস কালেকশনের টাকা সরকারী কোষাঘারে জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও নির্বাহী কর্মকর্তা তা জমা দেননি। যাহা জনস্বার্থ বিরোধী ও সরকারী রাজস্ব ফাকি দেওয়ার শামিল বলে দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে একই ব্যক্তিকে পর পর ২বার পাথর কোয়ারীর লীজ দেওয়ায় একটি গ্রুপ কোয়ারী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রকাশ্যে পাথর ব্যবসায়ীদের হুমকি ধমকি ও অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আসছে। ফলে পাথর ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে সকল ক্ষেত্রে বাধা গ্রস্ত হচ্ছেন। এছাড়া রয়েলিটির ঘাট পূর্বের নির্ধারিত জায়গা থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিনা রশিদে বহিরাগতদের মাধ্যমে রাজস্বও আদায় করা হচ্ছে। অভিযোগে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৭৮বিধি অনুযায়ী সরকারীভাবে খাস কালেকশন আদায় করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। এদিকে পাথর কোয়ারী থেকে খাস কালেকশন আদায়কে কেন্দ্র করে দু’টি পক্ষের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল সোমবার ব্যবসায়ীদের ব্যানারে এক গ্রুপ সরকারীভাবে খাস কালেকশন দাবী জানিয়ে পূর্বের ইজারাদারের মনোনীত কয়েকজন ব্যক্তিকে রয়েলিটি ঘাট এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে কোয়ারী এলাকায় যে কোন সময় দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া বার বার জানিয়ে আসছেন, লোভাছড়া পাথর কোয়ারী থেকে খাস কালেকশন আদায়ের জন্য কোন প্রকার লীজ প্রদান করা হয় নি। একজন সার্ভেয়ার ও তহশীলদারে মাধ্যমে কোয়ারী থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য সরকারী সকল নিয়ম কানুন মেনে খাস কালেকশন আদায় করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ জামানত রেখে খাস কালেকশন আদায়ে স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম সপ্তাহে জামানত বাবদ ৬লক্ষ ৯০হাজার টাকা, দ্বিতীয় দফায় ২ সপ্তাহের জন্য জামানত হিসেবে ২৩লক্ষ ৫০হাজার টাকা পাওয়া গেছে। কোয়ারী থেকে প্রাপ্ত খাস কালেকশনের টাকা যথা নিয়মে সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তার দাবী সরকারী ব্যবস্থাপনাতেই খাস কালেকশন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ নিয়ে কোয়ারীতে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান। এছাড়া সরকারীভাবে কোয়ারী থেকে খাস কালেকশন আদায় করার জন্য গত রবিবার নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়ার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পাথর ব্যবসায়ীরা ঘাট এলাকায় বহিরাগত কর্তৃক তাদের উপর বিভিন্ন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্থ করেন।