আর ভতুর্কি নয়, বিদ্যুতের খরচ সবাইকে দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ বিদ্যুতে সরকারি ভতুর্কি দেওয়া ঠিক হবেনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাগরিকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে আরো যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়া ঠিক নয়। উত্পাদনের খরচ সবাইকে দিতে হবে। সেদিকে খেয়াল রেখে সবাইকে তৈরি হতে হবে। তাতে আরও বেশি বিদ্যুৎ উত্পাদন সম্ভব হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূরের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের ৬২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু রাজধানীবাসীকে নয়, সারা দেশকে লোডশেডিংমুক্ত করতে চাই। বিদ্যুৎ উত্পাদন যেমন বেড়েছে, ব্যবহারও বেড়েছে। তবে সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে যত্নবান হতে হবে।
তিনি বলেন, নিজের বাসার সুইচ নিজে অফ করলে কারও সম্মান যায় না। আমি নিজেও তা করি। আমার ছেলেমেয়ে, নাতি-পুতিকে এই ট্রেনিং দেওয়া রয়েছে। যাতে বের হওয়ার সময় বিদ্যুতের সুইচ অফ করে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী সরকারি কার্যালয়সহ সর্বত্র কর্মকর্তা-কর্মচারী, এমপি, জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে বিদ্যুতের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন।
সংসদ নেতা বলেন, বাংলাদেশকে লোডশেডিংমুক্ত করতে তার সরকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পারমাণাবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উত্পাদন বৃদ্ধি করে চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে দেশে ১১ কোটি মোবাইল সিম ও চার কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এ ক্ষেত্রে মোবাইল ও ল্যাপটপ চার্জেও প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের নিজ ব্যবহারের বিপরীতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দেবে না।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গ
অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছে, কোনো বাধা দেয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে ২৯ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে, অনিবন্ধিত কয়েক লাখ। আমরা নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে ফেরত নিয়ে যেতে বলেছি। আর যেন অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে বিষয়ে মিয়ানমারও আন্তরিক।’
বেলা সোয়া ১১টার দিকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।