মুক্তিযোদ্ধার মামলা নিলেন না ওসি হারুন : তদন্তের নির্দেশ ডিআইজির
জৈন্তাপুর প্রতিনিধিঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে মো. আব্দুর জলিল নামক এক মুক্তিযোদ্ধার মামলা না নেয়ার কারণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি। গতকাল বুধবার জৈন্তাপুর থানার ওসিকে এই নির্দেশ দেন ডিআইজি।
বুধবার সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি বরবার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের করা এক অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়- মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল জৈন্তাপুর থানার বিরাইমারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন গরীব ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা। সরকারি ভাতায় তার জীবন চলে। তিনি এলাকার সরকারি দলীয় কিছু লোকের অত্যাচারে জর্জরিত। গরীব মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় সিলেট সওজ থেকে তামাবিল রোডের উভয় পার্শ্বে বিরাইমারা গ্রামের নিকট হতে ১কি.মি. খাল পশ্চিম দিকে মাছ আহরণ ও ধান ক্ষেত করার নিমিত্তে লীজ গ্রহণ করেন তিনি। কিন্তু ওই খালে মাছ চাষ করা অবস্থায় স্থানীয় আব্দুল মজিদের ছেলে ফুল মিয়া গংরা দলীয় লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার পায়তারা করলে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল এ.ডি.এম কোর্টে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৪ ধারায় ১৩/১৪ নং মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত তদন্ত প্রতিবেদ দাখিল করতে জৈন্তাপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। একইসাথে মামলার বাদি-বিবাদি পক্ষকে নোটিশও প্রদান করা হয়।
কিন্তু বিবাদী পক্ষ ফুল মিয়া গং ২৫ জন মিলে নোটিশের তোয়াক্কা না করে গত ২৫ ও ২৬ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের লীজকৃত খাল থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল থানায় অবগত করলেও মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কোনোও পদক্ষেপ থানা থেকে গ্রহণ করা হয়নি। জৈন্তাপুর থানার এসআই ইউসুফ আলী মুক্তিযোদ্ধ আব্দুল জলিলের মামলার প্রেক্ষিতে মনগড়া একটি রিপোর্ট প্রদান করেন। এ সংক্রান্ত খবর দৈনিক পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়।
অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়েছে- ওই ঘটনার পর বিবাদী ফুল মিয়া গং মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের ৫টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। জৈন্তাপুর থানায় অভিযোগ করলে তারা গরু উদ্ধার করে। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ গরু উদ্ধার করলেও আব্দুল জলিলের করা মামলা রেকর্ড করেনি। এমতাবস্থায় ফুল মিয়া গংরা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল ও তার পরিবারকে মারপিট, খুন এমনকি গুম করার হুমকি দিচ্ছে। এতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মানবিক দিক বিবেচনা করে তার পরিবারের জানমালের নিরাপত্তা ও মাছ লুট এবং গরু চুরির ব্যাপারে ফুল মিয়া গংদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করতে ডিআইজি বরবার আবেদন জানান। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের মামলা কেন রেকর্ড করা হয়নি তা তদন্তপূর্বক জানাতে জৈন্তাপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।