আদালতে সৌমেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

Soumenসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ ছাত্রদল কর্মী তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি সৌমেন দে। সিলেট মেট্রোপলিটন চিফ জুডিশিয়াল মহানগর মুখ্য বিচারিক আদালতে উপস্থিত হয়ে রবিবার বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে তিনি এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মেট্রোপলিটন চিফ জুডিশিয়াল মহানগর মুখ্য বিচারিক আদালত-১ এর বিচারক মো. সাহেদুল করিমের খাসকামরায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন সৌমেন। তিনি হত্যাকান্ডে জড়িত সহযোগীদের নামও প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষের ছাত্র এবং কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামকে কতিপয় দুর্বৃত্তরা ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসের ১০০৩ নং কক্ষে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরবর্তীতে ওসমানী হাসপাতালে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বিএনপি ও ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এই হত্যাকান্ডের জন্য কলেজ ছাত্রলীগকে দায়ী করা হয়। ইতিমধ্যেই ছাত্রলীগের ২০ নেতা-কর্মীর নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের সভাপতি সৌমেন দেকে শনিবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাছাড়া ১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকেও ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

ছাত্রদলকর্মী তাওহীদুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সৌমেন দে’কে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
Soumen_2রোববার বিকেলে সিলেট মহানগর ম্যজিস্ট্রেট মো. শাহেদুল করিম সৌমেন দে’র ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহন করার পর জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম এ জানান সৌমেন দেকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানানো হয়নি। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় রিমান্ড আবেদনের প্রয়োজন হয়নি। তবে প্রয়োজনে পরবর্তীতে রিমান্ডে এনে তাকে জ্ঞিাসাবাদ করা হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, সৌমেন দে’ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে হত্যাকান্ডে তার সহযোগীদের নাম বলেছে। সৌমেন দে’ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাই, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশফেকুজ্জামান আকন্দ রাফি, হাফিজুর রহমান, ফারহান আনজুম পাঠান, অন্তর দ্বীপ, শরিফুল ইসলাম, জহুর রায়হান রিপন, আবু সাহাল ফাহিম, জুবায়ের ইবনে খায়েজসহ ১৫জনের নাম উল্লেখ করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
প্রসংগত গত বুধবার রাতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবুসিনা ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামকে পিঠিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার নিহতের চাচা আনোয়ার হোসেন মাতব্বর বাদি হয়ে ছাত্রলীগ ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ১০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ৮-১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এদিকে তৌহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।