হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নিজ স্ত্রীকে নির্যাতন: পুলিশের এএসআই প্রত্যাহার
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ চোর নয়, ডাকাত নয়, নিজ স্ত্রীকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নির্যাতন করলেন সিএমপি সদরঘাট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুছা মিয়া। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করেছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মিরসরাইয়ের বাড়িয়াখালী এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে বর্তমানে সিএমপি সদরঘাট থানায় কর্মরত (এএসআই) মো. মুছা মিয়ার সঙ্গে একই উপজেলার সোনাপাহাড় এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল্লাহর মেয়ে ইসরাত সুলতানা প্রমির বিয়ে ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর।
প্রমির বাবা মো. আব্দুল্লাহ অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে প্রায় সময় বিভিন্ন অজুহাতে প্রমিকে মুছা মিয়া নির্যাতন করে আসছিল। যৌতুকের কারণে প্রায় আমার মেয়েকে মারধর করতো মুছা। তারপরও মেয়ের কথা চিন্তা করে সব সহ্য করেছি।
সর্বশেষ গত বুধবার ৪ জুন নগরীর পূর্ব মাদারবাড়ি একটি ভাড়া বাসায় উঠেন বলে জানান তিনি। তারা স্বামী-স্ত্রী গত ১ জুন শহরের পূর্ব মাদারবাড়ির এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছে। ওই বাসায় আমার মেয়ের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে হ্যান্ডক্যাপ লাগিয়ে দুই হাত বেঁধে বাইরে চলে যায় মুছা।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় তাকে ঘরে আটকে রেখে চলে যাওযার পর রাত তিনটার দিকে আমার মেয়ে কোনোমতে মোবাইলে আমাদের খবর দেয়। আমি এলাকার কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে নিয়ে আমার মেয়ে হ্যান্ডক্যাপ পরা অবস্থায় উদ্ধার করে বৃস্পতিবার (৫ জুন) সকালে সদরঘাট থানায় নিয়ে আসি। থানায় বিষয়টি অবহিত করে তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। মেয়েকে নির্যাতনের দায়ে মুছার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
নির্যাতিত ইসরাত সোলতানা প্রমি বলেন, ওই দিন (গত বুধবার) আমাকে মেরে হাতে হ্যান্ডক্যাপ লাগিয়ে সে বাইরে চলে যায়। আমার মা-বাবা এসে উদ্ধার না করলে আমি মারা যেতাম।
কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আব্দুর রউফ জানান, অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তাকে কর্মস্থল থেকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণব চৌধুরী বিষয়টি আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা অবহিত আছেন। এ ঘটনায় তাকে (মুছাকে) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে যে হ্যান্ডকাপ পরানোর অভিযোগ উঠেছে সে আমার থানার হ্যান্ডকাপ না। তাই আমি বেশি কিছু বলতে পারবো না। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সদরঘাট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুছার বক্তব্য জানতে বার বার মোবাইলে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।