চুনারুঘাটে গভীর অরণ্য থেকে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র উদ্ধার
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত এলাকা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরবর্তী বংলাদেশের হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি অরণ্য। সেই গভীর থেকে শতাধিক রকেট লাঞ্চার, ট্যাংক বিধ্বংসী বিস্ফোরক, ২ শতাধিক মর্টার সেল, রকেট লাঞ্চার এর চার্জার, অয়েলক্যানসহ বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র উদ্ধার করেছে র্যাব-৯। আরো দু’দিন এ অভিযান চলবে বলে র্যাব জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ গুলো উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলোর বেশীর ভাগ ভারতীয় বলে র্যাব সূত্র জানায়। তবে এর সাথে ভারতীয় উলফ কিংবা কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদি সংগঠন জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখছে র্যাব। এ ছাড়া যে স্থানটিতে এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাওয়া গেছে, তা এক সময় অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্সের (এটিটিএফ) আস্তানা ছিল বলে মনে করা হয়।
র্যাব জানায়, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি ত্রিপরা পল্লী থেকে প্রায় ১০০ গজ দুরে অবস্থিত ২টি টিলা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘেরাও করা হয়। রোববার রাত থেকে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অধিনায়ক সানা শামিমুর রহমানের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা অভিযান শুরু করে। র্যাবের ডগ স্কোয়াড ও বোমা স্কোয়াড অনুসন্ধ্যানে ব্যবহার করা হয়। অভিযানকালে একে একে ওই দু’টি টিলায় ৭টি বাংকার আবিস্কার করা হয়। বাংকার গুলো প্রায় ২৫/৩০ ফুট গভীর। এগুলোর মুখের অংশ থেকে ২/৩ ফুট নীচে গাছ ও আরসিসি স্লাব দেওয়া হয়। এরপর উপর মাটি দিয়ে বাংকারের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ৭টি বাংকারের মধ্যে ১টি বাংকারের মাটি সরিয়ে এর ভেতর চটের বস্তা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় স্তরে স্তরে ২০/২৫ ফুট গভীর পর্যন্ত রাখা শতাধিক রকেট লাঞ্চার, ট্যাংক বিধ্বংসী বিস্ফোরক, ২ শতাধিক মর্টার সেল, রকেট লাঞ্চার এর চার্জার, অয়েলক্যানসহ বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের এডিজি কর্ণেল জিয়াউল হাসান, র্যাবের মিডিয়া উইং এর পরিচালক হাবিবুর রহমান, র্যাব-৯ এর অধিনায়ক মুফতি, র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অধিনায়ক সানা শামিমুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান আরও ২ দিন চলবে।
র্যাব এর পরিচালক (লিগ্যাল এন্ড উইং) উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রোববার রাত থেকে র্যাব-৯ সাতছড়ির গভীর অরণ্যে অভিযান চালায়। র্যাব ওই এলাকায় ২টি টিলার একটিতে ২টি এবং অপরটিতে ৫টি বাংকারের এর সন্ধান পায় র্যাব। তিনি আরও জানান- র্যাবের নেটওয়ার্ক সিগনালে ওই বাংকারগুলোতেও অস্ত্র থাকার সংকেত পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইতোমধ্যে এক তৃতীয়াংশ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। কারা বাংকারগুলোতে অস্ত্রের মজুদ করেছে এ প্রশ্নের জবাব তিনি তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ২৭ জুন বগুড়ার কাহালুতে এক ট্রাক অস্ত্র পাওয়া যায়। যার সঙ্গে সাতছড়ি ত্রিপরা পল্লীর তৎকালীন হ্যাডম্যান যোগেশ বর্মার ভাতিজা আশীষ বর্মার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে অভিযোগ রয়েছে। এরপর থেকে আশীষ বর্মা পলাতক রয়েছে।