বিশ্বকাপ ফুটবলে ঘুষ কেলেঙ্কারিতে তোলপাড়
সুরমা টাইমস স্পোর্টসঃ কাতার নগদ ৩০ লাখ ডলার ঘুষ দিয়ে ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ হওয়ার পক্ষে সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। ব্রিটিনের সংবাদপত্র সানডে টাইমসে আজ রবিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে।
কাতার ফুটবলের তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তা এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ বিন হাম্মান বিশেষ তহবিল থেকে বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ফুটবল কর্মকর্তাদের সমর্থন আদায়ে নগদ এ অর্থের যোগান দিয়েছেন বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করা হয় সানডে টাইমসের রিপোর্টে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থ লেনদেনের ই-মেইল এবং অন্যান্য নথিপত্র ইতোমধ্যেই কুক্ষিগত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, আফ্রিকার ৩০টি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিদের নিয়ন্ত্রিত অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ডলার দিয়েছেন বিন হাম্মান। কাতারের প্রতি সমর্থন জানাবে এ শর্তে আফ্রিকায় কিছু চ্যারিটি ফুটবলসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছেন তিনি এবং আরো অর্থের যোগান দিয়েছেন। এক কর্মকর্তা ফুটবল মাঠের উন্নয়নে নামে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে দুই লাখ ৩২ হাজার ডলার দেয়ার জন্য হাম্মানের কাছে অনুরোধ করেছিলেন।
এছাড়া, ফিফার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ত্রিনিদাদের নাগরিক জ্যাক ওয়ারনারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৬ লাখ ডলার জমা করেছেন বিন হাম্মান। এরমধ্যে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান নিয়ে ভোটাভুটির আগে সাড়ে চার লাখ ডলার জমা দেয়া হয়েছে।
২০১৮ ফুটবল বিশ্বকাপ রাশিয়া এবং ২০২২ বিশ্বকাপ কাতারে হওয়ার বিষয়ে ২০১০ সালে ফিফার ২২ সদস্য বিশিষ্ট যে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের অন্যতম ছিলেন জ্যাক ওয়ারনার। ২০১১ সালে তিনি এ পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং হাম্মানের মালিকানাধীন একটি কোম্পানি ওয়ারনারকে অর্থ দিয়েছে বলে দুই মাস আগে ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ অভিযোগ তুলেছে।
অবশ্য বিন হাম্মান এ সব অভিযোগের বিষয়ে কোনো জবাব দেন নি এবং হাম্মানের পক্ষ থেকে তার ছেলেও এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন।
ফিফা সভাপতি পদে নির্বাচনের চেষ্টায় কর্মকর্তাদের উৎকোচ দেয়ার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালে বিশ্ব ফুটবল জগৎ থেকে বিন হাম্মানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
এদিকে, দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য ফিফার তদন্তকারী নিউ ইয়র্কের আইনজীবী মাইকেল গার্সিয়া আগামী সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাবেন। সোমবার ওমানে তিনি কাতার ২০২২-এর সাংগঠনিক কমটির উচ্চ পদস্থ সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে কথা রয়েছে। অবশ্য সানডে টাইমসের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে এ বৈঠক স্থগিত করা হতে পারে। এ ছাড়া, দুর্নীতির সর্বশেষ এ অভিযোগ ওঠার পর কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তীব্র চাপের মুখে পড়েছে ফিফা।