সমাজে উগ্রবাদ ও অস্থিরতা মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে
সস্মিলিত নাট্য পরিষদের সম্মেলনে সুলতানা কামাল
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, সংস্কৃতি চর্চা মানুষকে পরিশীলিত করে তোলে। সংস্কৃতিকর্মীরা নিজেদের মেধা, মনন ও রুচিকে কাজে লাগিয়ে সমাজকেও পরিশীলিত করে তোলেন। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড মানুষকে সবধরনের ুদ্রতা, হীনমন্যতা, বিভাজন, ধর্মীয় উগ্রতা ও সাম্প্রদায়িকতা থেকে দূরে রাখে। তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারনে ও সাংস্কৃতিকর্মকান্ড স্থিমিত হয়ে আসার কারনে সমাজে উগ্রবাদ ও অস্থিরতা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সিলেটের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম চালিকাশক্তি সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেটের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সকাল ১১ টায় সিলেট শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তেলনের মধ্য দিয়ে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নাট্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান পরিচালক হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য। পরে শিল্পকলা একাডেমির অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় নাট্যকর্মী ও সুহৃদ সমাবেশ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রায় তিন দশক যাবৎ দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে বেগবান করতে নাট্য পরিষদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে এবং সকল প্রকার অপসংস্কৃতি, দেশবিরোধীতা ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় গণমানুষের কাছাকাছি থেকে কাজ করে আসছে। আগামীতে এই কর্মকান্ড আরো বেগবান হবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সম্মিলিত নাট্যপরিষদের প্রধান পরিচালক নিজামউদ্দিন লস্করের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্তের পরিচালনায় দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের নাট্যকর্মী ও সুহৃদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সুুুপ্রিয় চক্রবর্তী, সিলেট জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশ গুপ্ত, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট শহীদুল ইসলাম শাহিন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাজনীন হোসেন, সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, নাট্য পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি নিরঞ্জন দে, নাট্য পরিষদের সভাপতি অনুপ কুমার দেব প্রমুখ।
নাট্যকর্মী ও সুহৃদ সমাবেশ শেষে দুপুরে নাট্য পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। প্রধান পরিচালক নিজামউদ্দিন লস্করের সভাপতিত্বে অধিবেশনে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন যুগ্ন সম্পাদক মোস্তাক আহমদ। সাধারণ সম্পাদকের খসড়া প্রতিবেদন পাঠ করেন রজত কান্তি গুপ্ত। অর্থ রিপোর্ট পেশ করেন কামরুল হক জুয়েল। রিপোর্টের উপর মুক্ত আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয়।
বিকেল ৪ টায় সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে ১৪২১-২২ বাংলার নীতি নির্ধারনী কমিটি নির্বাচন করা হয়। নির্বাচনে সর্ব সম্মতিক্রমে নিজামউদ্দিন লস্করকে প্রধান পরিচালক এবং নিরঞ্জন দে ও রওশানারা মনির রুণাকে পরিচালক নির্বাচিত করা হয়।
নবনির্বাচিত পরিচলাকবৃন্দ আগামী ৩০ মে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের কার্যকরী কমিটি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেন।
দিনভর অনুষ্ঠানে বিদায়ী কার্যকরী কমিটি সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি খোয়াজ রহিম সবুজ, নির্বাহী সদস্য সিরাজউদ্দিন শিরুল, সাইফুর রহমান চৌধুরী সুমন প্রমুখ। সম্মেলেনে নাট্য পরিষদে অর্ন্তভূক্ত ২১ টি সংগঠনের প্রায় প্রতিটি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।