ভারতীয় সহকারী হাই কমিশানের সাথে মেয়র আরিফের বৈঠক

Arifসুরমা টাইমস ডেস্কঃ চট্টগ্রাম অফিসে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার সোমনাথ হালদার ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মধ্যে সৌজন্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরীর কুমারপাড়াস্থ মেয়র আরিফের বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠককালে মেয়র আরিফ সিলেট অঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া অভিন্ন নদীর পানি সমবন্টনে ভারতকে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান।
এসময় মেয়র আরিফ আরো বলেন- প্রকৃতিকে বাধা দিয়ে কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতা তৈরী করলে তা শুভবার্তা নিয়ে আসে না, বরং ন্যাচারাল ডিজাস্টার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভারতের উচিত হবে প্রকৃতিকে বাধা না দিয়ে সিলেটের উপর দিয়ে প্রবাহিত সকল নদীতে সমভাবে পানি বন্টন করা।
বৈঠককালে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আরও বলেন, ডাউকী ফল্ট ও আসাম ফল্ট এর কাছাকাছি হওয়ার কারণে সিলেট ও আসাম অঞ্চলের মানুষ বড় ধরনের ভুমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য ভারত ও বাংলাদেশকে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ গ্রহন করা উচিত। বাংলাদেশীদের কাছে শিলংকে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে ভিসা প্রসেসিং সহজীকরণ করতে হবে।
বিপুল সংখ্যক রোগী প্রতিবছর ভারতে চিকিতসা নিতে যান সেই দিক বিবেচনা করে সিলেটে একটি ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং সেন্টার করারও আহবান জানান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
বৈঠককালে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার সোমনাথ হালদার জানান, সমভাবে পানি বন্টনসহ বড় বড় ইস্যু দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে সবকিছুর সমাধান সম্ভব। এই ব্যাপারে তিনি ভারতীয় সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে উপস্থাপন করবেন বলেও জানান।
সিলেটের পাসপোর্ট কালেকসন সেন্টারকে ভিসা প্রসেসিং সেন্টারে রূপান্তর করা সম্ভাবনা আছে জানিয়ে সোমনাথ হালদার বলেন, ভারতীয় সরকার বাংলাদেশীদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকে। এমনকি অনেক সময় মানবিক বিবেচনা করেও সহজে ও দ্রুত ভিসা ইস্যু করে থাকে।
ভারতীয় সরকার প্রতিদিন সাড়ে তিনহাজার বাংলাদেশীকে ভিসা প্রদান করে উল্লেখ করে তিনি জানান, ঢাকা থেকে প্রতিদিন আড়াই হাজার, চট্টগ্রাম থেকে পাঁচশ এবং রাজশাহী থেকে চারশ ভিসা প্রদান করা হয়। ভারতীয় সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে যে আন্তরিক এসব পরিসংখ্যান সেই ইঙ্গিতই প্রদান করে।
সোমনাথ হালদার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দীর্ঘদিনের সুম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবেশী দেশ গুলোর সাথে সুসম্পর্ক রেখেই ভারতীয় সরকার আরও সামনের পানে এগিয়ে যেতে চায়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের প্রশংসা করে সোমনাথ হালদার বলেন, সিলেট সিটি অনেক পরিচ্ছন্ন। এটি যে কারো নজর কাড়তে বাধ্য, আমারও নজর কেড়েছে। বিশেষ করে ভোরের মধ্যেই নগরীর আবর্জনা পরিস্কার করাকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ উল্লেখ করে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার সোমনাথ হালদার বলেন, অনেক পশ্চিমা দেশও ভোরের আগেই আবর্জনা পরিস্কার করতে হিমশিম খায়। উপমহাদেশের সিটিগুলোর জন্য সিলেট একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
বৈঠককালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: সুধাময় মজুমদার, নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর, চীফ কনজারভেন্সী অফিসার হানিফুর রহমানসহ আরও অনেকে।