প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওসমানীনগরের ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ : আটক ৬
ওসমানী নগর প্রতিনিধিঃ সিলেটের ওসমানীনগরে বিএনপি নেতা ও গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিককে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় এক নারীসহ ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের অ্যান্টি-কিডন্যাপিং স্কোয়াড মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করে। আটকরা হলেন মাসুমা (২৫), রাজিব ওরফে সজিব (২৭), নিকুল (২৬), আবুল কাশেম (৪৭), ইকবাল হোসেন ওরফে কবির (৩৬) এবং এমদাদুর রহমান (৩০)। চেয়ারম্যান আতাউর রহমান গত ১১ মে ঢাকায় আসেন চিকিৎসার জন্য। রাতে তিনি অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পথে সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে মাসুমা তাকে দেখা করতে বলে। এরপর তিনি সেখানে তার প্রাইভেটকারটি থামান। এ সময় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাড্ডা এলাকার ভেতরে এক বাড়িতে আটকে রাখে। এরপর তাঁকে মারধর করে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে।
একপর্যায়ে নিজের কাছে থাকা ৪০ হাজার টাকা তাদের দিয়ে বাকি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে অপহরণকারীরা তাঁকে ১২ মে ছেড়ে দেয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনার পর আতাউর রহমান গোয়েন্দা পুলিশের অ্যান্টি-কিডন্যাপিং স্কোয়াডে যোগাযোগ করেন এবং গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এই তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, রাজধানীর বাড্ডা এলাকার অপহরণকারীদের একটি চক্র মাসুমা নামে এক তরুণীকে দিয়ে আতাউর রহমান মানিককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে চেয়ারম্যান মানিকের কাছ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা ও পরে আরো তিন লাখ টাকার দেওয়ার আশ্বাসে অপহরণকারীরা তাঁকে মুক্তি দেয়। তবে এই চক্রের অন্যতম দলনেতা জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেন, চক্রটি এর আগেও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যানদের এভাবে অপহরণ করে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিম্নবিত্ত পরিবারের উঠতি বয়সী কিছু মেয়েদের অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা অর্থের প্রলোভন দেখায়। পরে তাদের টার্গেট করা লোকদের ফোন নম্বর দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলার উৎসাহ জোগায়। এরপর তারা বিভিন্নভাবে ওই সব লোকদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে ঢাকায় আসতে বলে। পরে ওই মেয়ের সঙ্গে টার্গেট করা ব্যক্তির আপত্তিকর ছবি তুলে প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করা হয়। এ ছাড়া টার্গেট করা ব্যক্তিকে মারধরও করে অপহরণকারীরা। পরে সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদার কারণে অনেকে টাকা দিয়ে মুক্তি পান।