ফিল্মি কায়দায় কিলিং মিশনে ৪০ যুবক
ফেনী প্রতিনিধি: ‘ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে সকাল থেকে প্রায় ৪০ জন অজ্ঞাত যুবক ঘোরাফেরা করছিল। প্রকাশ্যে তাদের হাতে কিছু দেখা যায়নি। শরীরটা উঁচু দেখা যাচ্ছিল। বোঝা যাচ্ছিল, জামার নিচে বা প্যান্টের পকেটে কিছু একটা আছে।’
কথাগুলো বলছিলেন, ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে অবস্থিত একটি চা-স্টলের মালিক। তিনি একরাম হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বর্ণনা করেন, সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের পর পর আসে একরামুল হকের গাড়ি। গাড়ি দেখামাত্র পিঁপড়ার মতো ছুটে আসে দুর্বৃত্ত ওই যুবকরা। জড়ো হয় একরামের গাড়ির সামনে। রিকশাভ্যান ও পাওয়ার টিলার দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। এর পরই প্রথমে গাড়ি ভাঙচুর, পরে গাড়িতে থাকা একরামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে তারা। এসময় ভয়ে গাড়িতে থাকা অন্য তিনজন নেমে যান। একরাম বের হতে চাইলেই তাকে গুলি করা হয় কয়েক রাউন্ড। পরপরই দূরে গিয়ে বেশ কয়েকটি পেট্রোলবোমা ছোড়ে তারা। একরামসহ গাড়ি, পাওয়ার টিলার, রিকশাভ্যান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
মঙ্গলবার সকালে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরামকে এভাবে হত্যা করা হয়। ফেনীর একাডেমি রোডের বিলাসী সিনেমা হলের সামনে ঘটে সন্ত্রাসের এ ঘটনা।
এ সময় স্থানীয় পত্রিকার এক সাংবাদিক, একরামের দেহরক্ষী ও গাড়িচালকসহ তিনজন অগ্নিদগ্ধ হয়। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস এসে গাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে একরামের দেহ।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে একরামুলের সমর্থকরা। ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে তারা।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত একরামের সমর্থকরা মহাসড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে বিক্ষুব্ধরা জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ও গত চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচনে একরামের প্রতিদ্বন্দ্বী মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনারের বাড়ির খড়ের গাদায় আগুন দেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরে ৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়। এসময় জেলা শহরে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।