‘মাগো আর মাত্র ছয়টা মাস অপেক্ষা করো দেখবা আল্লায় আমাগো তুলবোই’
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ‘টাকা পয়সা না থাকলে মানুষের কোনো দাম নাই, মাগো আর মাত্র ছয়টা মাস অপেক্ষা করো দেখবা আল্লায় আমাগো তুলবোই। তুমি ডাক্তার দেখাইছোনি? এমনই কথা স্মরণ করে আহাজারিতে পরিবেশ ভারি করে তোলেন নিহত সেলিমের মা। আর্থিক অনটন থেকে মা ও তার পরিবারকে মুক্তি দিতে না পারলেও নিজেই অবশেষে চির মুক্তি নিয়ে পৃথিবী থেকে চলে গেলেন মো. সেলিম। সৌদিতে নিহত কুমিল্লার হোমনা উপজেলার চান্দেরচর ইউনিয়নের চান্দেরচর গ্রামে বাহাউদ্দিনের একটি বাড়ির পরেই অবস্থিত একই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুবরণকারী মো. সেলিমের (৩৫) বাড়ি। সেখানেও শুধু কান্নার রোল। কেউই যেন স্বজনকে সামলাতে পারছিলেন না। ঘরের এক কোণায় মাটির মেঝেতে বসে ছেলের জন্য মাটি চাপরে কেঁদে একাকার হয়ে যাচ্ছিলেন সেলিমের মা।
ছেলের সাথে শেষবারের মতো মোবাইল ফোনে কথা হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি করছিলেন আর অঝোরে কাদঁছিলেন। স্ত্রী তাসলিমা বেগম আরেক কক্ষে তার দুধের ছেলে জিহাদকে কোলে আর ৭ বছর বয়সী মেয়ে নুসরাত জাহানকে নিয়ে বুক চাপরে বিলাপ করছিলেন। স্বজনদের কোনো সান্ত্বনার বাণীই যেন বাঁধ ভাঙা কান্নার ঢেউ থামাতে পারছেন না। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে আকাশ প্রকম্পিত করা শব্দের আহাজারিতে বলেন,‘ ভাই ছবি তুললে কী হইব।’ তারে কি আর সন্তানের বুকে ফিরাইয়া দিতে পারবেন।’ তিনি জানান, সেলিম ২০০৯ সালে সৌদি আরবে যান। তার সাথে শেষ কথা হয় সোমবার রাত ৯টায়। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের সিফা সানাইয়া তিতাস ফার্নিচারে (সোফা ফ্যাক্টরি) সোমবার রাত ১০টায় অগিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে মারা যান ৯ বাংলাদেশি ও ২ ভারতীয়। এদের মধ্যে মো. জালাল (৩৫), আ. গাফফার (২৯), মো. সেলিম (৩৫), বাহাউদ্দিন (৩১), নাজির হোসেন (২৬), মতিউর রহমান (৩২) ও শাহ আলমের (২৫) বাড়ি কুমিল্লায়। অপর দুইজন হলেন ফেনীর জাকির (৫৫) ও মাদারীপুরের আফতাব (৪৫)।