এলাকার ৬০ ভাগ আমিষের চাহিদা মেটায় শ্রীমঙ্গলের রাজার হ্যাঁচারী এন্ড ফিসারী
আয়ের একটি অংশ ব্যয় হয় শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে
নুরুল ইসলাম শেফুল : একজন গোলাম মোস্তফা রাজা যার উৎপাদিত মাছে শ্রীমঙ্গল উপজেলার অধিকাংশ চাহিদা পুরণ হয়। আর এর আয়ের অর্থের বিশাল অংশ ব্যয় হয় শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে। একই সাথে তার হ্যাঁচারীর পোনা শ্রীমঙ্গল তথা সিলেট বিভাগের ৬০ ভাগ ফিসারী মালিকদের পোনারও চাহিদা পুরণ করে। একসময় গোলাম মোসÍফা বসবাস করতেন লন্ডনে। ব্যবসা বানিজ্য ও ছেলে মেয়ে সবাই এখনও লন্ডনে থাকেন। কিন্তু গোলাম মোস্তফা রাজা লন্ডনের আয়েশী জীবন ফেলে এসে নিজ দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে এবং বেকার সমস্যার সমাধানে গড়ে তুলেন রাজা ফিসারীজ এন্ড হ্যাঁচারী। ইতোমধ্যে তার প্রতিষ্টানে প্রায় দেড় শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আর নদীনালা, বিল ও হাওর ভরাট হওয়ার ফলে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় সে চাহিদা পুরণে নিরন্তন ভুমিকা রেখে চলছে তার ফিসারী। অন্য দিকে তার ফিসারীর আয় দিয়ে তিনি নিজের চাহিদা মেটানোর পর বাকী অর্থ ব্যয় করেন সামাজিক কর্মকান্ডে। এ অর্থ দিয়ে চলে তার প্রতিষ্ঠিত মাস্টার গোলাম মোস্তফা রাজা বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্থ খরচ। এ ছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি মসজিদ। সাহায্যের হাত প্রশস্ত করেছেন একাধিক সামাজিক ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে। ইতোমধ্যে তিনি শ্রীমঙ্গলের জনশক্তিকে দক্ষ ও শক্তিশালী সম্পদে রুপান্তরিত করার জন্য পরিকল্পনা করেছেন একটি টেকনিক্যাল কলেজ স্থাপনের।
গোলাম মোস্তফা রাজা মিয়ার ফিসারী ও হ্যাঁচারী সরজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় বেশ কয়েকটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পুকুরের জন্য বিনা মুল্যে পোনা বিতরণ করছেন এবং তার হ্যাঁচারী থেকে পোনা কেনার জন্য বেশ কয়েকজন ক্রেতাও রয়েছেন। এসময় একজন ক্রেতা শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আছকির মিয়া জানান, তার ফিসারীর জন্য তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে পোনা সংগ্রহ করে ঠকছিলেন। কিন্তু রাজা ফিসারী এন্ড হ্যাঁচারী থেকে পোনা নিয়ে তিনি বেশ লাভবান। এসময় মাস্টার গোলাম মোস্তফা রাজা জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে তিনি ফিসারী প্রতিষ্টা করে মাছ চাষ করে আসছেন। কিন্তু ভালো পোনার অভাবে তিনি নিজেই বার বার লোকসান দিচ্ছিলেন। একসময় তিনি মনস্থ করেন বাহির থেকে পোনা না কিনে নিজেই রেণু তৈরী করেন। এরপর থেকেই মাছের জন্য ভালো ডাক্তার যোগাড় করে তার ফিসারীর বড় বড় মাছগুলো বাছাই করে শুরু করেন মাছের রেণু উৎপাদন। এই রেণু দিয়েই পুরণ হতে থাকে তার অর্ধশতাধিক পুকুরের পোনার চাহিদা। অন্যদিকে তার ফিসারীর মাছের স্বাদ অনেকটা হাওরের মুক্ত জলাশয়ের মাছের মতো। দ্রুত বিষয়টি ছড়িয়ে যায় মানুষের মধ্যে । আর বাজারে রাজা ফিসারীজের মাছের চাহিদা বেড়ে যায় অত্যধিক হারে। অনুরুপ ভাবে তার রেণু পোনার জন্যও বিভিন্ন ফিসারী মালিকরা ভিড় করেন তার কাছে। বাধ্য হয়ে তিনি তার হ্যাঁচারীর পরিসর বাড়ান। আর বর্তমানে শুধু সিলেট বিভাগ নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত’ থেকে ফিসারীর মালিকরা এসে সংগ্রহ করেন তার পোনা।