মিলানে বিশ্ব মে দিবসে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহনে বিশাল রালি অনুষ্ঠিত
নাজমুল হোসেন,মিলান ইতালি থেকেঃ আজ বিশ্ব মে দিবস। সারা পৃথিবীতে আজ মে দিবস পালন করা হয়েছে। ইতালির মিলানে বিশ্ব মে দিবসে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহনে বিশাল রালি শহর প্রদক্ষিন করে। সকাল ১০ টায় মিলানের পর্তা ভেনিছিয়া থেকে শুরু হওয়া রালিটি শেষ হয় ডুওমো তে। বাংলাদেশ শ্রমিক সং গঠন ছাড়া ও ইতালির সিজিয়েল ,কমুনি দি মিলানো,কমুনি দি লোম্বার্দিয়া ,কমুনি দি রিপুবলিকা,কমুনি দি পিনেনচা সহ ইতালির প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি শ্রমিক সংগঠন অংশগ্রহন করে। এই রালিতে বাংলাদেশ ,ইন্ডিয়া ,শ্রীলংকা দেশ সহ ইতালিতে বসবাস রত অন্যান্য দেশের প্রায় ১০ হাজার এর উপরে প্রবাসী শ্রমিক অংশ নেয় বলে জানা যায়। প্রতি বছর এই দিনে সকল শ্রমিক সং গঠনের উপস্থিতে এই রেলিটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা অন্যান্য বছরের ন্যায় এই বছর ও অংশগ্রহন করে।
শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সেই ঐতিহাসিক দিন মে দিবস। শ্রমিকেরা প্রতিদিন ১০/১২ ঘন্টা কাজ করতো ন্যায্য মজুরী পেত না। তারা মজুরি না কেটে দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রম নির্ধারনের প্রথম দাবি জানায়। কিন্তু কোন শ্রমিক সংগঠন ছিল না বলে এই দাবী জোরালো করা সম্ভব হয়নি। । ১৮৮০-৮১ সালের দিকে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠা করে Federation of Organized Trades and Labor Unions of the United States and Canada [১৮৮৬ সালে নাম পরিবর্তন করে করা হয় American Federation of Labor]। এই সংঘের মাধ্যমে শ্রমিকরা সংগঠিত হয়ে শক্তি অর্জন করতে থাকে।
১৮৮৪ সালে সংঘটি ‘৮ ঘন্টা দৈনিক মজুরি’ নির্ধারনের প্রস্তাব পাশ করে এবং মালিকও বনিক শ্রেণীকে এই প্রস্তাব কার্যকরের জন্য ১৮৮৬ সালের ১লা মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। ১লা মে কে ঘিরে প্রতিবাদ, প্রতিরোধের আয়োজন চলতে থাকে। আর শিকাগো হয়ে উঠে এই প্রতিবাদ প্রতিরোধের কেন্দ্রস্থল।
অবশেষে ১৮৮৬ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহের এক সন্ধ্যাবেলায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মাঝে শ্রমিকদের আন্দোলনস্থলে বোমা বিস্ফোরিত হয়, যাতে মারা যান বেশ কজন পুলিশ এবং শ্রমিক। কে বা কারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলো তা জানা যায় নি, তবে পেটোয়া বাহিনী শ্রমিকদের ওপর চড়াও হয়ে ১১ জনকে হত্যা করে। সেই শ্রমিকদের আত্মদান বৃথা যায় নি। তাদের দাবীসমূহ পূরণ হয়েছিলো। আজও তাদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করি আমরা প্রতি বছরের মে মাসের প্রথম দিনে।