সারিকাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে লিভ টুগেদার
সুরমা টাইমস বিনোদনঃ মাহফুজ ও নিরবের সাথে সারিকার রোমাঞ্চের খবর অনেকেরই জানা ছিল। এবার যুক্ত হয়েছে মাহিম করিম (সুমিত)।- তিনি সারিকার হবু বর। যার সাথে ভালোবাসার পথ চলতে সারিকা এখন রিহ্যাবের বাসিন্দা। পেশায় ব্যবসায়ী পরিচয় দিলেও মাহিমের নামে কোন ট্রেড লাইসেন্সও খুঁজে পাওয়া দুরূহ বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান।
গুলশানে ‘নুরেন্নাহার’ নামে নিজের একটি গাড়ির শোরুম আছে বলে প্রায়শই মাহিম বলে বেড়ান। কিন্তু এ শোরুমটি তার বন্ধু নূর এফাজ নাহারের। শোরুমটি তার নামেই করা হয়েছে। মাহিম বরং ওখানে গাড়ি বিক্রি করতে পারলে কিছু কমিশন পান। আর এ ধরনের কমিশনই তার আয়ের উৎস।
একটা ভাবও আছে মাহিমের। একেক দিন একেক মডেলের গাড়ি ব্যবহার করেন। ‘নুরেন্নাহার’ শোরুমের ‘ফর সেল’ গাড়িগুলোই ব্যবহার করেন মাহিম। গাড়ি পরিবর্তনের সাথে গার্লফ্রেন্ডও পরিবর্তন। এর আগে সুস্মিতা, জারা, প্রিয়াংকা নামে কয়েকজন তরুণী তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মাহিমের সাথে ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের অনেকেরই ভাষ্য, মেয়েদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সুবিধা গ্রহণ করাই ওর উদ্দেশ্য। প্রতি রাতেই মাহিম গাড়ি হাঁকিয়ে গুলশান-বনানীতে ঘুরঘুর করেন। মেয়েদের সামনে নিজেকে অনেক বড় ব্যবসায়ী হিসেবে প্রকাশ করেন। স্মার্টনেসের কারণে মেয়েরাও তার ফাঁদে ধরা পড়ে। আর এমন এক ফাঁদেই পড়েছেন মডেলকন্যা ও অভিনেত্রী সারিকা।
সারিকাকে প্রায় রাতেই মাহিমের সঙ্গে গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায় দেখা যায়। অন্য অনেকের মতো সারিকার সাথেও দিনের পর দিন লিভটুগেদার করেছেন মাহিম। উত্তরার ৪ নং সেক্টরের ৩ নং রোডের ৩০ নম্বর বাসার ৩ তলায় তার কথিত নিজস্ব বাসাতেই চলে এই লিভটুগেদার। তার এসব কাজের সহযোগী মাহিমেরই বড় ভাই অমিত।
অমিত ও মাহিম মিলে এরই মধ্যে সারিকার সব খোঁজখবর নিয়েছেন। মাহিম সারিকাকে বিয়ে করতে পারলেই তারা বড় একটি দান মারতে পারবেন। কারণ, ধনী বাবা-মায়ের ১ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে সারিকা সবার প্রিয়।
সারিকা প্রায় অর্ধকোটি টাকা দামের গাড়ি ব্যবহার করেন। সেই সঙ্গে তার ব্যাংক একাউন্টেও প্রায় ১ কোটি টাকার কাছাকাছি রয়েছে বলে জেনেছেন মাহিম। তাই সারিকাকে বিয়ে করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। সারিকা তার বাসায় মাহিম সম্পর্কে জানান, ও খুব ভালো ছেলে, ব্যবসায়ী, উত্তরায় নিজেদের ফ্ল্যাট, কোন ঝুটঝামেলা নেই। দুই ভাই ও মা। তার বড় ভাইয়ের বউ খারাপ ছিল বলে ডিভোর্স হয়ে গেছে।
সারিকার পরিবার খোঁজ-খবর নিতে গেলে সারিকা বাধা দেন। সারিকা বলেন, খোঁজ-খবর নেয়ার দরকার নেই। তাতে তিনি ছোট হয়ে যাবেন, তার প্রতি মাহিমের ভালোবাসা কমে যাবে।
সারিকার বাবা-মা মেয়ের কথার ওপর ভিত্তি করে মাহিমের জন্মদিনে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সাক্ষাতে সারিকার সাথে মাহিমের বিয়ের দিন-তারিখও চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু তার পরদিন থেকে আবারও বাসা থেকে সারিকা উধাও। ৩ দিন ধরে লাপাত্তা।
অবশেষে জানা যায়, সারিকা মাহিমের সাথেই এক বাসায় আছেন। সেখানে নেশা করেন� একথা শুনে মেয়েকে ত্যাজ্য করতে চান তার বাবা। এরই মধ্যে বেরিয়ে আসে সত্য ঘটনা।
জানা যায়, ভদ্রবেশী প্রতারক মাহিম করিম সারিকাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে কয়েক মাস ধরে এমন অসামাজিক জীবন-যাপন করছেন। সারিকার পরিবারের লোকজন মাহিমের বাসায় গিয়ে দেখেন নিম্নমানের জীবনযাপন করছেন তারা। শুধু লোকদেখানো ভাবসাব ছাড়া আর কিছু নেই।
সারিকার পরিবার মাহিমের হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে ১৮ মার্চ তাকে বারিধারার ‘প্রত্যয়’ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করান। কিন্তু সেখানে মাহিম গিয়ে সারিকাকে নিজের বউ বলে পরিচয় দেয় এবং মাহিমের মা-ও সেখান থেকে সারিকাকে ছেলের হবু বউ বলে বের করে নিতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা সারিকার পরিবারকে বলেন, মেয়েকে অন্য কোথাও ভর্তি করান।
বর্তমানে সারিকা ঢাকার অদূরে একটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে রয়েছেন। সেখানে কারও সাথে দেখা করা নিষেধ। সে জায়গাটিও খুঁজে বের করেছেন মাহিম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, মাহিম নামে একজন আমাদের এখানে ফোন দিয়েছেন। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি তার পরিচয় দেন। এছাড়া জানান, তিনি সারিকার স্বামী।
ওই চিকিৎসক জানান, বিষয়টি আমরা এড়িয়ে গেলে তিনি আমাদের বিভিন্ন ধরনের উপঢৌকনের লোভ দেখান। আমরা এতে রাজি না হলে মাহিম ধমক দিয়ে বলেন, সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না।
মাহিমের এ ধরনের আচরণে তাকে অসুস্থ বলছেন অনেকেই। মাত্র ২৪ বছরের এই তরুণ বাবা মারা যাওয়ার পরে দার্জিলিং বোর্ডিং স্কুলে ছিলেন। সেখানে ১০-১২ ক্লাস পর্যন্ত পড়ে আর পড়ালেখা হয়নি।