সিলেটে কালবৈশাখীর তান্ডব : সিলেট ও সুনামগঞ্জে বৃদ্ধা সহ নিহত ৫
ঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ৮২ কিলোমিটার : বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেট নগরীসহ সিলেট, সুনামগঞ্জ সহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে রোববার রাতে এক ভয়াবহ কালবোশেখীর ঝড় বয়ে গেছে। সিলেট আবহাওয়া দফতরের তথ্যমতে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ রেকর্ড করেছে ঘন্টায় ৮২ কিলোমিটার। রাত ১২টা ৪৮ মিনিট থেকে ১২ টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে যাওয়া ঝড়ের গতিবেগ ছিলো ঘন্টায় ৮২ কিলোমিটার। সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক অমিত হাসান এ তথ্য জানান।
সিলেট ছাড়াও বিভাগের অন্যান্য জেলায়ও কাল বোশেখীর ঝড় বয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঝড়ে প্রচুর গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে ঝড়ে বিপুল পরিমাণ গাছও ভেংগে পড়ে। সিলেটের ১২ উপজেলায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশতাধিক কাঁচা ঘর।কানাইঘাটে ঝড়ে মারা গেছেন আলতাফুন্নেছা (৫৫) নামের এক বৃদ্ধা। তিনি কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের গোরকপুর গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর স্ত্রী।এছাড়া আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১৫ জন। সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে চারজন নিহত হয়েছেন। এসময় ঝড়ে কয়েক হাজার ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার গাছ-পালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোববার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন- ধর্মপাশা গুললা রাজাপুর এলাকার কাচুমিয়া (৩৫), বেবি আক্তার (০৮), সুখাই রাজাপুর এলাকার সান্চু মিয়া (৬৫), দক্ষিণ বংশীকুণ্ডা এলাকার দুদু মিয়া (৪০)।
নগরীর আম্বরখানা সরকারী কলোনীর প্রাইমারী স্কুলের একটি গাছ ভেংগে বৈদ্যুতিক তারের উপর পড়লে তার ছিড়ে যায়। গাছটি বিমানবন্দর সড়কের উপর পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আম্বরখানা কলোনীর সামন থেকে চৌকিদেখি পর্যন্ত ট্রাকের একটি দীর্ঘ লাইন তৈরী হয়ে যায়। পাঠানটুলাসহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় গাছ ভেংগে পড়েও চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অনেকগুলো বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড ভেংগে পড়ে যায়। নগরীর বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের কাঁচের গ্লাস ভেংগে যায়। নগরীর দরগা গেইটে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পুরনো চারতলা ভবনের টিনের চালের বেশ কিছু টিন উড়ে যায়। নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় বাসাবাড়ী থেকে উড়ে আসা টিন পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঝড়ের গতি কমে আসলে লোকজনকে নিজেদের টিন কুড়াতে দেখা যায়। কালবোশেখী চলাকালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নগরবাসীকে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। স্থানে স্থানে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে পড়ে। বিদ্যুৎ সরবরাহ কখন স্বাভাবিক হবে, তা জানা যায়নি। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে রাতে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন কাজ করে যাচ্ছিল। বিদ্যুতের অভাবে মোবাইল ফোনসহ মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট ও ইমেইল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও সিলেট সদর, ছাতক, বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর, দিরাই, শাল্লা, ধর্মপাশা এলাকায় শত শত কাঁচা ঘর-বাড়ির চালা উড়ে গেছে, বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
নগরীর বারুতখানার আসগর স্কোয়ারের কাছে ঝড়ে কোথা থেকে উড়ে আসা পানির প্লাস্টিকের বড়ো একটি ট্যাংক রাস্তায় পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে, সিলেট সদর, ছাতক, বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর, দিরাই, শাল্লা, ধর্মপাশা এলাকায় শত শত কাঁচা ঘর-বাড়ির চালা উড়ে গেছে, বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।