সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ পড়তে খতিবের আহ্বান

Maolana Mohammed Salah Uddinসুরমা টাইমস ডেস্কঃ প্রচন্ড দাবদাহ থেকে মুক্তি ও বৃষ্টি প্রার্থনায় সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মো. সালাহ উদ্দিন।
তিনি শুক্রবার জুমার খুতবায় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মসজিদের ইমামের নেতৃত্বে সারা দেশে এই নামাজ পড়ার আহ্বান জানান।
খতিব বলেন, প্রতিটি মসজিদের খতিবদের কাছে আমার আহ্বান ৫ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য দোয়া করবেন। সম্ভব হলে প্রতিটি এলাকায় ইসতিস্কার নামাজ পড়াবেন।
তিনি বলেন, ইসতিস্কার নামাজের সময় প্রত্যেকের গরু-ছাগলসহ গবাদি পশুগুলো নামাজের মাঠে নিয়ে যাবেন। কারণ এসব পশু নিষ্পাপ।
আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমাদের ওপর আরও বড় গজব নাযিল করতে পারেন উল্লেখ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গুণাহর কারণে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে। গরম বেশি পড়ছে। কোন সরকার বৃষ্টির মালিক নন। সরকারপ্রধান বৃষ্টি দিতে পারেন না। আপনারা বৃষ্টির মালিক আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন।’
তিনি বলেন, মানুষ আল্লাহর পথে ফিরে না এলে তিনি আরও বড় গজব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করে দিতে পারেন। নিজেদের পাপের জন্য তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসতে হবে। ক্ষমা চাইতে হবে।
খুতবায় সেন্টমার্টিনে সমুদ্র ভ্রমণে গিয়ে সগারে নিখোঁজ আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রের জন্য দোয়া করেন খতিব।
প্রসঙ্গত, হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি জুমার দিন মসজিদে নববীতে দারুল কাজার দিকে স্থাপিত দরজা দিয়ে প্রবেশ করলেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! (অনাবৃষ্টির ফলে) মালসম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জীবিকার পথরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতএব, আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন তিনি আমাদের মেঘদান করেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! আমাদের মেঘ দিন।’ (আমাদের ফরিয়াদ শুনুন! আমাদের ফরিয়াদ শুনুন!)।
আনাস (রা.) বলেন, খোদার কসম! এ সময় আসমানে কোন মেঘ বা মেঘের চিহ্নও ছিল না। আর আমাদের ও সালা পাহাড়ের মাঝে কোন ঘরবাড়ি কিছুই ছিল না। (ক্ষণিকের মধ্যে) তাঁর পেছন থেকে ঢালের মতো একখণ্ড মেঘ উদিত হলো। একটু পর তা মাঝ আকাশে এলে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল এবং বৃষ্টি শুরু হলো।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর খোদার কসম, আমরা সপ্তাহকাল ধরে আর সূর্যের মুখ দেখিনি। অতঃপর পরবর্তী জুমায় আবার এক ব্যক্তি ওই দরজা দিয়ে প্রবেশ করলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! মালসম্পদ সব বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পথরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতএব, আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেন।
বর্ণনাকারীদ্বয় বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আবার হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! আমাদের অবস্থা পাল্টে দাও, আমাদের ওপর এ অবস্থা চাপিয়ে দিও না। হে আল্লাহ! পাহাড়ি এলাকায়, মালভূমিতে মাঠের অভ্যন্তরে ও গাছপালা গজানোস্থলে তা ফিরিয়ে নিয়ে যাও।’
এরপর বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে গেল। আমরা বের হয়ে সূর্যকিরণে চলাফেরা করতে লাগলাম। (মুসলিম: ১৯৫৫)।