“কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য হুক্কা”
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ থেকেঃ এক সময়ের জনপ্রিয় পল্লী গ্রামাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের ধুমপানের একমাত্র মাধ্যম হুক্কা খাওয়ার প্রচলন কালের আবর্তনে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আজ থেকে প্রায় তিন/চার দশক আগেও আবহমান বাংলার গ্রাম-গঞ্জের ধুমপায়ীরা হুক্কার মাধ্যমে তামাক পানের নেশায় অভ্যস্থ ছিল। উঠতি বয়সের যুবক থেকে শুরু করে বয়স্ক,বিত্তবান,ধনী ও দরিদ্র অনেকের বাড়ীতেই হুক্কার প্রচলন ছিল। গ্রামের বৈঠকখানা গুলোতে পালক্রমে হুক্কা টানতো বিভিন্ন বয়সের পুরুষরা। বিত্তবানদের বাড়ীতে ছিল নলের হুক্কা ও ফসি হুক্কা চেয়ারে গা এলিয়ে আয়েশী ভঙ্গিতে গৃহকর্তা নলের পাইপ মুখে দিয়ে যখন জমিদারী ভঙ্গিমায় হুক্কায় টান দিত তখন এ দৃশ্য পানে অপলক চোখে চেয়ে থাকতো বৈঠকখানায় আগত মানুষরা। তামাক পাতা টুকরো টুকরো করে কেটে এনে এতে চিটাগুড় মিশ্রিত করে হুক্কার প্রধান উপাদান তামুক। আর এতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে নিঃসরিত ধোয়া হুক্কার তলনীর পানিতে ডুবিয়ে“কুড়–ত কুড়–ত”শব্দ বের হয়ে আসতো। এক প্রকার ঘ্রান বের হতো তা থেকে। প্রতিবন্ধকতার কারনে এ দৃশ্য দেখা সম্ভব না হলে হুক্কার শব্দে দুর থেকেও বোঝা যেত আশেপাশে কেউ হুক্কা টানছে। এখন বর্তমান সময়ে আর সেই চিরাচরিত পরিচিত দৃশ্যটি খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে। কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে সেই ঐতিহ্যের অনেকটাই। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই হুক্কা খাবে দুরে থাকুক দেখেইনি। হুক্কার স্থান দখল করে নিয়েছে বিড়ি,সিগারেট,হুস্কি,হেরোইন,গাজা,আফিমসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। যার মধ্যে ক্ষতিকর নিকোটিন রয়েছে শতভাগ। তার পরেও এগুলোর নেশায় নতুন করে আসক্ত হয়ে পড়ছে লক্ষ লক্ষ উঠতি বয়সের যুবক। যাদের নিয়ে দেশের সকল অবিভাবক মহল থাকেন সব সময় উদ্বিগ্ন। তাই আর বেশি দিন নয় নতুন প্রজন্মদের কাছে হুক্কা অনেকটা প্রাচীর ঐতিহ্য হিসাবে পরিচিত হয়ে থাকবে।