সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগের হুমকি সুরিঞ্জিতের
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ গত সরকারের দফতর বিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জাতীয় সংসদ ভবনের অফিস দখল করে নিয়েছেন বর্তমান ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
বিষয়টি ‘অপমানজনক’ বিবেচনায় আটবারের সাংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংসদ বর্জন করে চলেছেন। এমনকি সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই। ৪ ফেব্রুয়ারি সংসদের অতিরিক্ত সচিব ও গণপূর্ত বিভাগের এক কর্মকর্তাকে নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সংসদের নয়তলায় অবস্থিত দক্ষিণ-পূর্ব ব্লকে যান ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মায়া। নিজে উপস্থিত থেকে তিনি সংশ্লিষ্টদের তালা ভাঙার নির্দেশ দেন। এরপর দখল নেন ঐ অফিসের।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সুরঞ্জিত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের কাছে অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনায় স্পিকার বিস্মিত হলেও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মায়া।
জানা গেছে, নিয়ম অনুসারে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছাড়া মন্ত্রীরা সংসদেও একটি কার্যালয় পান। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গত সংসদে প্রথমে আইন বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে যে কার্যালয় পান সেটিই পরে তিনি রেলমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করেন। এরপর দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হয়েও তিনি ওই কার্যালয় ব্যবহার করেছেন।
দশম সংসদে সংসদীয় কমিটি গঠিত না হওয়ায় নতুন করে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। সে কারণে অফিসটি সুরঞ্জিতের নামেই বরাদ্দ রয়েছে। তখন কার্যালয়ের সামনে সুরঞ্জিতের নামফলকও ছিল। এ সময় অফিসের এমএলএসএস কর্মচারীরা সুরঞ্জিত অফিসটি ব্যবহার করেন বলে জানান তাদের। কিন্তু মায়া সেদিকে কর্ণপাত করেননি।
খবর শোনার পর ক্ষুব্ধ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ছাড়াও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয় এক পর্যায়ে তিনি সংসদ বর্জন ছাড়াও পদত্যাগের হুমকি দেন। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।
এ বিষয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করে আর নিজেকে ছোট করতে চাই না।
তবে ঘটনা অস্বীকার করেছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেন, অফিস কি দখল করে নেওয়ার মতো বিষয়। এটি তো জায়গা জমি নয়।
তবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি শোনার পর আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। একজনের নামে বরাদ্দ অফিস আরেকজন দখল করে কীভাবে! ভদ্রতা বলেও তো একটা কথা আছে। আসলে আমাদের একে অন্যের প্রতি সম্মান থাকা উচিত। তবে আমার মনে হয় এ ক্ষেত্রে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া নয়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই বেশি উৎসাহ দেখিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে সংসদের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা নজিরবিহীন। সরকারি দলের এক এমপির নামে বরাদ্দকৃত অফিস একই দলের আরেক এমপির দখলের ঘটনা এর আগে আর ঘটেনি।