নাই ‘মা’ বলেই বেসামাল
স্টাফ রিপোর্টারঃ ‘মা’ নাই গৃহে যার সংসার অরন্য তার। সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট শহরে আলোচিত উইমেন্স মিডিকেলের মেট্রিক পাস কথিত নার্স নাইমার বেসামাল চালচলন আবারও অমর এই বানীকে মনে করিয়ে দেয়। বালাগঞ্জ থানার মনোহরপুর গ্রামের মৃত আসকর আলী ও খাদিজা বেগমের মেয়ে নাইমা বেগম উরফে সখিনা বেগম মেট্রিক পাস করেই চাকুরী পেয়ে যায় সিলেটের স্বনামধন্য বেসরকারী হাসপাতাল ‘সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এর সুবাদেই বেসামাল হয়ে উঠে নাইমা। একাধিক অপকর্ম ও পুরুষ কেলেংকারীতে অভিযুক্ত হিসাবে অল্প দিনের মধ্যেই চাকুরিচ্যুত হয় নাইমা। নাইমার অপকর্মের আংশিক সংবাদ সুরমা টাইমসে প্রকাশিত হলে সুরমা টাইমস অফিসে রাত সাড়ে এগারটার দিকে দুজন পুরুষ বন্ধু নিয়ে আসে নাইমা। সুরমা টাইমস কতৃপক্ষ নাইমাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলে নাইমা কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। এক সময় নাইমা কেঁদে ফেলে এবং তার অপকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। পরবর্তীতে নিজেকে সংশোধিত করে চলাফেরা করার অংগীকার করে এবং লিখিত প্রতিবাদ নিয়ে আসার কথা বলে চলে যায় নাইমা। নাইমা সুরমা টাইমস্ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আব্দুল হালিম সাগর এর টিলাগড়স্থ বাসায় তার প্রেমিক জকিগঞ্জ থানার বারহাল (মাইজগ্রাম) শাহগলীবাজার এলাকার বাসিন্ধা ও বর্তমান অস্থায়ী বাড়াটিয়া বাসা নং ১৩ রোড নং-১ ব্লক-৯ সেগম মঞ্জিল, শ্যামলী মেজরটিলা, থানা-শাহপরাণ(রহ:) (এসএমপি), সিলেটের খসরু মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন দুলন ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ এলাকার মৃত হিরন তালুকদারের ছেলে মাহবুবুল ইসলামসহ কয়েকজন ছেলে বন্ধু নিয়ে ৬ ডিসেম্বর দুপুরে বাসায় পুরুষ মানুষ বাহিরে চলে গেলে বাসায় হামলা করে ভাংচুর এর চেষ্টা চালায় প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঠিক এর পরদিন আবার ৭ ডিসেম্বর একই ভাবে হামলার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় শাহপরান তৎকালীন থানার ওসি শিবেন্দ্র নাথের মেবাইল ফোনে বিষয়টি জানালে থানার এএসআই রিপন আহমদ এসে নাইমাকে আটক করলেও নাইমা নিজের ভুল শিকার করে এবং তার সঙ্গীরা পালিয়ে গেছেন বলে স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন করবেনা বলে লিখিত দেওয়ার কথা বলে। গার্জিয়ান নিয়ে থানায় আসার কথা বলে লিখিত না দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সুরমা টাইমস অফিসে না এসে সাপ্তাহিক বাংলার বারুদ পত্রিকার ৩নং পৃষ্টায় ‘প্রকাশিত সংবাদের ভিন্নমত’ শিরোনামে গত ১৬/১২/২০১৩ তারিখে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। বিজ্ঞাপনটিতে নাইমার বক্তব্য ছিল নি¤œরুপঃ ( সাপ্তাহিক বাংলার বারুদ পত্রিকায় গত ৮ ডিসেম্বর সংখ্যায় ‘মনোহরপুরের পুরষ শিকারী নাঈমা কি সকল নিয়মের উর্ধ্বে ’ শীর্ষ সংবাদে ভিন্নমত পোষণ করছি। আমার গ্রামের বাড়ী বালাগঞ্জ উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। পিতা : মৃত হাজী আছকর আলী, মাতা : মৃত খাদিজা বিবি। আমি ২০০৫ সনে আর্থিক সমস্যার কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লিনিকে চাকুরি করে আসি। ২০১৩ সনের জানুয়ারী মাসে আমি চাকুরীটি ছেড়ে দেই। লেখাপড়ায় রয়েছে সরকারী কলেজে। এরই মধ্যে একটি পরিবার থেকে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তাদের প্রস্তাব অনুসারে রাজি না হওয়ায় আমাকে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অতপর ডিআইজি সিলেট রেঞ্জ বিভিন্ন থানায় একাধিক ভাবে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের পূর্বক ঐ মহলটি আমার নামে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। সম্প্রতি সময়ে সিলেট কোতয়ালী মডেল থানার বিদায়ী এসআই হাদিউল ইসলাম আমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি দরখাস্ত তদন্ত করেন। উক্ত দরখাস্তের দরখাস্তকারীর নাম ঠিকানা না পাওয়ায় দরখাস্তটি তিনি জিডিমূলে ভুয়া আখ্যায়িত করেন। তার পরও আমার বিরুদ্ধে একের পর এক জিডি দরখাস্ত ইত্যাদী কে বা কাহারা দিয়ে আসছে এটা আমার জানা নেই। উক্ত মহলটি আমার লিখা-পড়া ইত্যাদী নষ্ট করতে উৎসুখ মুখোর হয়ে উঠেছে। আমি বাবা মা হারানো এতিম মেয়ে তাই আমি সমাজের বিবেকবান পুলিশ কর্মকর্তাসহ সমাজপতিদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি”।- বিনীত নাঈমা বেগম।)
এদিকে বাসায় সন্ত্রাসী নিয়ে হামলার এ ঘটনায় সাংবাদিক আব্দুল হালিম সাগর নাইমা ও তার প্রেমিক দুলনসহ অঙ্গাতনামা ব্যাক্তিদের অভিযুক্ত করে শাহপরাণ থানায় ৮/১২/২০১৩ তারিখে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যাহার নং ৩৬১, তারিখ-(৮/১২/২০১৩ইং)।- এরপর ঐ জিডিটি তদন্ত করেন শাহপরাণ থানার এএসআই জামাল আহমদ। এএসআই জামাল আহমদ প্রায় ১৯ দিন তদন্ত করে শাহপরাণ থানা নন এফআইআর প্রসিকিউশন নং-৬৪/১৩ তারিখ-৩০/১২/২০১৩ইং মূলে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এসআই জামাল তার তদন্ত প্রতিবেদন :
“অফিসার্স ইনচার্জ সাহেব উক্ত বিষয় ডাইরী ভূক্ত করিয়া আইনগত ব্যবস্থাপূর্বক গ্রহনের জন্য আমার উপর অর্পণ করিলে আমি অভিযোগে বর্ণিত ঘটনাটি অধতদ্য অপরাধ বিদায় তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালতে অনুমতি সাপেক্ষে সরেজমিনে তদন্ত করি। আমার তদন্তকালে স্থানীয় লোকদেরসহ একাধিক সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে দরখাস্তকারী সাপ্তাহিক সুরমা টাইমস্’ের নির্বাহী সম্পাদক তাহার পত্রিকার সাংবাদিক আগুন চৌধুরী সুরমা টাইমস্ পত্রিকায় সিলেটের পুরষ শিকারী নাইমার কালো অধ্যায় শিরোনামে তথ্যবহুল ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় পর হইতে ১নং বিবাদী ২নং বিবাদীকে সঙ্গে নিয়ে আসিয়া দরখাস্তকারীর বাসায় গত ০৫/১২/২০১৩ ইং তারিখ রাত অনুমানিক ২০:২০ ঘটিকার সময় দরখাস্তকারীর মা ও বোনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আশপাশের লোকজন দরখাস্তকারীর বাসায় আসিয়া ১ নং ও ২নং বিবাদীকে তাড়াইয়া দেয়। গত ০৬/০২/২০১৩ ইং দরখাস্তকারী ও বাসার অন্যান্য পুরুষ জুমার নামাজে চলে গেলে ১ নং ও ২ নং বিবাদী দরখাস্তকারীর বাসায় আসিয়া দরখাস্তকারীর মা ও বোনকে এবং দরখাস্তকারী সহ বাসার সকল সদস্যকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো সহ প্রানে মারার হুমকি প্রদর্শন করে। আমার তদন্তকালে ৩নং কলামে বর্নিত আসামীদের বিরুদ্ধে দঃবিঃ আইনের ৫০৬ ধারায় অপরাধ সত্য বলিয়া প্রতিয়মান হওয়ায় অত্র শাহপরা থানার নন এফআইআর ৬৪/১৩ তাং ৩১/১২/২০১৩ ধারা ৫০৬ দঃবিঃ তাখিল করিলাম। ”
তদুপরি নাইমা আরও বিভিন্ন ভাবে সাংবাদিক আব্দুল হালিম সাগরকে অব্যাহত হুমকি ও হয়রানি করতে থাকে। এক পযায়ে নাইমার সাথে যুক্ত হয় কতিপয় সাংবাদিক নামধারী বখাটে। সুরমা টাইমসের তদন্তে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। নাইমার সাথে সদ্য পরিচিত বরিশালের এক মহিলার। ঐ মহিলা সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে সিলেটে ব্যাপক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছিল। সুরমা টাইমস’র তদন্তে বেরিয়ে আসে ঐ মহিলার ইতিবৃত্ত। তিনি কখনো সাংবাদিক, কখনো মানবাধিকার কর্মী, কখনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সিলেটে ব্যাপক কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহন করে তার আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছিলেন তার অবৈধ কর্মকান্ড। তদন্তে বেরিয়ে আসে ঐ মহিলার একাধিক স্বামী ও প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিদের সাথে শারিরিক সম্পর্কের কথাও। এ নিয়ে সুরমা টাইমস’র একটি টিম রিপোর্ট প্রকাশ করার স্বার্থে অধিকতর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিল। এরই ফাকে ঘটনা আচ করতে পেরে ঐ মহিলা তড়িঘড়ি করে নাইমাকে দিয়ে ধর্ষন মামলা দায়ের করায় শাহপরান থানায়। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় সাংবাদিক সাগরের ছোটভাই আহাদকে। সাথে সাগর সহ মা, বোন সহ পরিবারের সকল সদস্যকে আসামি করা হয়।
অদৃশ্য শক্তির বদৌলতে কোন রকম তদন্ত ও যথাযথ প্রমানাধি ছাড়াই সাংবাদিক সাগরসহ তার পরিবারের আরো ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা রেকর্ড করে সিলেট এসএমপির শাহপরাণ থানার পুলিশ। অবশ্য এ মামলা দায়েরের পর সাগর ও তার পরিবারের অপর সদস্যরা মহামান্য হাইর্কোট থেকে অর্ন্তবর্তী কালীন জামিন নিয়েছেন। উক্ত মামলা নিয়ে সিলেটে এসএমপির একেক কর্মকর্তার একক রকম মন্তব্য রয়েছে। কোন তদন্ত ছাড়া মামলাটি রেকর্ড করায় হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের বেঞ্চ ও হতবাক। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ মামলাটিই ভিন্ন বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বয়োজৈষ্ট ব্যারিষ্টার মশিউজ্জামান।
এখানে উল্লেখ্য যে মামলা প্রধান সাক্ষী দুলাল আহমদ দুলনের বিরুদ্ধেও একটি মানবাধিকার সংস্থার নিকট এরখম একটি অভিযোগ দায়ের করে। পরে গত ১৯/০৮/২০১২ তারিখে সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করে। (কোতোয়ালি থানার জিডি নং ৯৭৬)
নাইমার রয়েছে অসংখ্য প্রেমিক। তার মধ্যে লন্ডন প্রবাসী রাহাত, দরগা গেইট এলাকার ফয়সল, সুমন, দাড়িয়াপাড়ার পলাশ, দক্ষিন সুরমার জুনেদ, নরসিংদির সালেহ আহমেদ, ও বালাগঞ্জের জুনেদ আহমেদের ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য আমাদের হাতে আছে।
মামলার এজহারে নাইমা দাবি করে সাংবাদিক সাগরের ছোটভাই আহাদের সাথে ১৭/০১/২০১২ ইং তারিখে মৌলুভী বাসায় এনে ৩০০০০০/= টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়ানো হয়। অথচ এর আগে গত ০১/০১/২০১৪ ইং তারিখে এসএমপি কমিশনার বরাবরে নাইমা একটি অভিযোগ দাখিল করে । ঐ অভিযোগে নাইমার অভিযোগ ছিল ভিন্ন। নাইমা বলেছিল সাংবাদিক সাগরের পরিবার নাকি তার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেরৎ দিচ্ছিলনা। কমিশনার বরাবরে অভিযোগে নাইমা এও লিখেছিল যে সাংবাদিক সাগর তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার না করলে ঐ টাকাও সে চাইবে না। এসএমপি বরাবরে লিখিত অভিযোগে নাইমা এও বলেছিল যে সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের কাছে তার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রেস ক্লাব কতৃপক্ষ নাকি সাগরকে ভুয়া সাংবাদিক বলে আখ্যায়িত করেছে। অবশ্য জেলা প্রেসক্লাবের কোন সদস্য এমন দুঃসাহসিক দ্বায়ীত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। ২৩/১২/২০১৩ ইং তারিখে সিলেটের ডিআইজি মহোদয় বরাবওে নাইমা একই অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করে।
নাইমা দাবি করে ০১/১২/২০০৯ ইং হইতে সাংবাদিক সাগরের শাপলাবাগ ২নং রোডের ৮ নং বাসায় যাতায়াত শুরু করে। অথচ সাংবাদিক পরিবার ১লা মার্চ ২০১২ ইং তারিখে শাপলাবাগের ঐ বাসায় ভাড়া আসেন। একেক দফতরে একেক রখম বক্তব্য দিয়ে আসছে বহুগামি এই নাইমা। সাপ্তাহিক বাংলার বারুদ পত্রিকায় তার দেয় বিজ্ঞপ্তিতে নাইমা বলে সাংবাদিক পরিবার তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় সে রাজি হয়নি বিধায় তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় কুৎসা রটনা করা হচ্ছে। কিন্তু এর কয়েক মাস পরই ধর্ষন মামলা করে নাইমা যা কিনা ২০০৯ সালে সংগঠিত। মধ্যে অনেক অভিযোগ অনেক প্রচারনার পরও কি করে শাহপরান থানা বিনা তদন্তে এরখম একটি ভুয়া মামলা জামিন অযোগ্য ধারায় এফআইআর করে। তাহলেকি একথা যথার্থই বলা যায় যে সাংবাদিকদের হয়রানি করতে প্রানপনে লেগে আছেন এসএমপি। এর আগে বহু সাংবাদিককে বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ আছে এসএমপি’র বিরুদ্ধে। সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক বাচ্ছুকে যেভাবে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে তা সিলেটের প্রায় সকল সাংবাদিকেরই জ্ঞাত। কিছু সিনিয়র সাংবাদিককে ভুয়া অডিও রেকর্ড শুনিয়ে বিভ্রান্ত করেছে এসএমপি। তাতে কি? ঐ রেকর্ড যে সাঈদীকে চাদে দেখার মত ঘটনা তা সিলেটের প্রায় সকল তরুন সাংবাদিকের ধারনা আছে।