তাহিরপুরে আনন্দ স্কুলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
কামাল হোসেন, তাহিরপুর: তাহিরপুরে আনন্দ স্কুলের স্কুল ড্রেস, উপকরন ও অবকাঠামো উন্নয়নের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্পের ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর মোস্তাক আহমদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে গতকাল তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মাহতাবপুর আনন্দ স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফৌজদার মিয়া। লিখিত অভিযোগ ও বিভিন্ন তথ্য সুত্রে জানা যায়, রক্স (রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন) সারা দেশে ১৪৪ টি উপজেলায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় তাহিরপুরে ১২৭ টি আনন্দ স্কুলের কার্যক্রম শুরু হয়, সেই সাথে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এবং স্থানীয় পর্যায়ে দেখ ভাল করার জন্য ১ বছরের চুক্তি হয় উন্নয়ন সংস্থা এ এস ডি ও এর সাথে। কার্যক্রম শুরুর পর ১২৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৫ শ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তন্মধ্যে ৯০ টি স্কুলে বরাদ্দ আসে। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় উপকরন বাবদ প্রতি বিদ্যালয়ে ৪ হাজার ২ শ টাকা, পোষাক বাবদ প্রতি শিক্ষার্থী ৪ শ টাকা, ছবি প্রতি ১২৫ টাকা,অবকাঠামো স্থাপন বাবদ প্রতি স্কুল ৩ হাজার ৫শ টাকা,ঘর ভাড়া প্রতি মাস ১২শ টাকা উন্নয়ন সংস্থার প্রতি ৬ মাসের জন্য ১৯শ টাকা বরাদ্দ করে রক্স (রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন) । সংস্থার নিয়ম অনুয়ায়ী বরাদ্দের উত্তোলনকৃত টাকা সভাপতি এবং স্কুল শিক্ষক মিলে উত্তোলন করে নিজ দায়িত্বে স্কুল ড্রেস, উপকরন ও অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যায় করবে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে রক্স ট্রেনিং-কো অর্ডিনেটর মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ নিজ উদ্যেগে বরাদ্দের টাকা উত্তোলনের পূর্বেই স্কুল ড্রেস ও উপকরন কিনে এনে প্রদান করছে যাহা অত্যন্ত নি¤œ মানের এবং বরাদ্দের বিপরীতে সামান্য। এরই সুত্র ধরে রক্স ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর মোস্তাক আহমেদ শিক্ষিকারা টাকা উত্তোলনের পর পরই স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের দরজায় দাড়িয়ে ,স্কুল ড্রেসের টাকা,উপকরনের টাকা ও অবকাঠামো উন্নয়নের ৩ হাজার ৫শ টাকা শিক্ষিকাদের কাছ থেকে আদায় করছেন। এদের মধ্যে যারা টাকা প্রদান না করছেন তাদেরকে চাকুরী হারানোর ভয় দেখাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষিকা বলেন,আমরা কোন রকমে একটা চাকুরী পেয়েছি,মোস্তাক সাহেবের বিরুদ্ধে কথা বললে চাকুরী হারাতে হবে,তাই আমরা শুধু আমাদের ৩ মাসের বেতনের টাকা নিয়ে এসেছি। মাহতাবপুর আনন্দ স্কুলের শিক্ষিকা রোজী আক্তার ও ভাটি তাহিরপুর পূর্বপাড়া আনন্দ স্কুলের শিক্ষিকা নাসিমা আক্তার লিপি বলেন, বরাদ্দের টাকা উত্তোলনের পর মোস্তাক সাহেব আমাদেরকে,উপকরন বাবদ ৪হাজার ২শ এবং স্কুল পোষাকের টাকা দিয়ে দেয়ার জন্য তাগিদ দিচ্ছেন,। মাহতাবপুর আনন্দ স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফৌজদার মিয়া বলেন, টাকা উত্তোলন করে আমরা ব্যায় করবো কিন্তু মোস্তাক সাহেব উনি নিজে নি¤œ মানের উপকরন ও স্কুল ড্রেস কিনে আমাদের টাকা দেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন । এ ব্যপারে আনন্দ স্কুল বাস্তবায়নকারী সংস্থা এ এস ডি ও এর কমিউনিটি মোবিলাইজার আলা উদ্দিন আহমেদ বলেন , শিক্ষকদের কাছে মোস্তাক সাহেব বলেছেন উনার কথা ছাড়া আমাদের সার্ভিস চার্জ ১৯শ টাকা প্রদান না করতে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা এ এস ডি ও এর নির্বাহী পরিচালক নূর ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অনেক পরিশ্রম করে আনন্দ স্কুলগুলো দাড় করিয়েছি কিন্তু রক্স ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ আমার সাথে তো কোন যোগাযোগই করেনা এমন কি আমার প্রতি স্কুলের সার্ভিস চার্জ না দেয়ার জন্য শিক্ষকদের অনুরোধ করেন।
এ প্রসঙ্গে রক্স আনন্দ স্কুলের ট্রেনিং কো অর্ডিনেটর মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ বলেন, সংস্থার পিডি স্যারের নির্দেশে আমি কাজ করছি। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ শওকত আকবর এর মোবাইলে (০১৭১২৮১০৬৭৯)যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামন কামরুল বলেন আমার কাছে আনন্দ স্কুলের লুটপাট ও দুর্নিতীর বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে।