সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর ধসে তিন ভাই-বোন নিহত
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর ধসে একই পরিবারের তিন ভাই-বোন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন লাক্কাতুড়া রাবার বাগানের শ্রমিক আজান আলীর মেয়ে নাসিমা বেগম (১৮), ছেলে জাহেদ আহমদ (১৫) ও আজান আলীর ভাই মৃত কুতুব আলীর ছেলে রুহুল আমিন (১২)। জাহেদ ও রুহুল স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্র। মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৩ টার দিকে লাক্কাতুড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রাত ১১টা থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিলো। বৃষ্টির মধ্যে রাত সাড়ে ৩টার দিকে স্টেডিয়ামের সীমানাপ্রাচীর ধসে পাদদেশে থাকা রাবার শ্রমিক আজান আলীর ঘরে পড়ে যায়। এতে দেয়াল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। চা শ্রমিক আজান আলী জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতে তারা ঘুমিয়ে ছিলেন স্টেডিয়ামের ২ নম্বর গেইটের পূর্বদিকের দেয়ালঘেঁষা নিজেদের ঘরে। রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা বিশাল আকৃতির দেয়ালের নীচে চাপা পড়েন। তিনিসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য কোনো রকম ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও পরিবারের হতভাগা তিন সন্তান দেয়াল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আজান আলী জানান, মেডিকেল এলাকার ডালিম আহমদ নামের এক ছেলের সঙ্গে তার মেয়ে নাসিমা আক্তারের বিয়ে ঠিক হয়েছে গত মাসে। মেয়ে স্বামীর বাড়ি যাওয়ার আগেই পরপারে চলে যেতে হয়েছে তাকে। এদিকে, মঙ্গলবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলে হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ চা শ্রমিক লাক্কাতুড়া এলাকায় সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথে বিমানবন্দর-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সিলেট ফায়ার ব্রিগেড অফিসের সহকারি পরিচালক শহীদুর রহমান জানান, ঘটনার খবর পেয়েই তিনটি গাড়ী নিয়ে ফায়ার ব্রিগেড কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে ফ্লাড লাইড জ্বালিয়ে দেয়ালের নিচ থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। দেয়াল ধ্বসের ঘটনায় স্থানীয়রা স্টেডিয়ামের নিম্নমানের কাজকে দায়ী করেছেন। পাদদেশে বসতি থাকলেও সীমানাপ্রাচীরে কোন গার্ডার (প্রটেকশন পিলার) ছিলনা। প্রাচীরে কোন রডও ব্যবহার করা হয়নি।