মারধরের পর কিশোরীকে বিয়ে করে ‘আপোস’ করলেন পুলিশ সদস্য
ডেস্ক রিপোর্টঃ বিয়ের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীকে মারধর করেন পুলিশ সদস্য। এরপর তাঁর সঙ্গেই বিয়ে দিয়ে ‘আপোস’ করে নিয়েছে ওই কিশোরীর পরিবার।
দিনাজপুরের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার কার্যালয়ে বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানার ওয়্যারলেস অপারেটর মোস্তফা কামালের সঙ্গে ১৬ বছরের ওই কিশোরীর বিয়ে হয়।
বাংলাদেশে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
মেয়েটির বাবা বৃহস্পতিবার বলেন, ওই পুলিশ সদস্যের পক্ষ থেকে বার বার বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছিল।
“মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপসের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা দেন মোহরে বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।”
এ বিয়ের বর মোস্তফা কামাল দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওয়্যারলেস অপারেটর। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় এর আগে ওই শিক্ষার্থীকে তিনি তুলে নিয়ে পিটিয়ে জখম করেছিলেন বলে অভিযোগ এসেছিল।
মাথায় রক্তাক্ত জখমসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠিপেটার আঘাত নিয়ে গত মঙ্গলবার দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয় মেয়েটি। সে খবর সংবাদপত্রেও আসে।
সে সময় তার বাবা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ সদস্য মোস্তফা কামাল তার মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
তার সঙ্গে মেয়েটির বিয়ের ব্যবস্থা করে পুলিশ আরেকটি ‘অপরাধ’ করেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মারুফা বেগম ফেন্সি।
তিনি বলেন, “ভিকটিম আপস করলে আমাদের করার কিছু থাকে না। অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে থানা আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে ১৬ বছরের কিশোরীর সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করে আরেকটি অপরাধ করেছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি এ কে এম খালেকুজ্জামান দাবি করেন, বিয়েতে পুলিশের কোনো ভূমিকা ছিল না।
“দুই পরিবারের অভিভাবকরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে বিয়ে দিয়েছে।”
ওই পুলিশ সদস্যকে আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “ভিকটিমের পরিবার মামলা করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুত ছিল।”
বাল্যবিয়ের এ ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, “আগে খবর পেলে বাল্যবিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া যেত। এখন যেহেতু বিয়ে হয়ে গেছে, করার আর কী আছে?”