শিশুর প্রতি পুলিশের এ কেমন বর্বরতা!
ডেস্ক রিপোর্টঃ ‘ঘটনাটি গত ২১ এপ্রিল বিকেলের দিকে। পুলিশ সদস্যরা তখন শিশুটিকে ধরে মারছিলেন। তবে তারা বুঝতে পারেননি আমি ছবি তুলেছি। ছবি তোলার পর গিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করি, ওকে মারছেন! জবাবে তারা বলেন, শিশুরা ক্রিসেন্ট লেকের ভেতরে ডোবাডুবি করে, ওখানে নেমে যায়, ওদেরকে সামলানো যায় না, এছাড়া উপায় নাই।’ বলছিলেন প্রামাণ্য আলোকচিত্রী সৈকত মজুমদার।
সৈকত মজুমদার তার তোলা ছবিগুলো ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। আর তা ছড়িয়ে পড়েছে ওয়াল থেকে ওয়ালে। চলছে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনা। নিন্দা আর ক্ষোভ।
ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, একজন পুলিশ সদস্য একটি শিশুকে পায়ের কাছে ফেলে মারধর করছেন। আর সঙ্গে থাকা বাকি পুলিশ সদস্যরা তা দেখে হাসছেন। ছবিগুলোতে শিশুটিকে কান্নারত অবস্থায় হাতজোর করে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ছবিগুলো ফেসবুকে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে এবং পুলিশের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ছবিগুলো নিয়ে কথা বলতে চাইলে আলোকচিত্রী সৈকত মজুমদার আরও বলেন, ‘ছবিগুলো তোলার পরে আমি পুলিশ সদস্যদের আরও প্রশ্ন করতে চাইলে একজন বলেন, এখন ইউনিফর্ম পরা আছি, আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে না। আপনিতো রেডি হয়ে আছেন ছবি তোলার জন্য। আর এই ছবি তুলে তো আপনি আমার ক্ষতি করবেন। কিন্তু তখনও তারা জানতেন না যে আমি ছবি তুলে ফেলছি। আর আমি কাছে গিয়ে কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই তারা শিশুটিকে ছেড়ে দেন। পরে আমার সঙ্গে কথা না বলেই পুলিশের ওই দল চলে যায়।’
প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার পর সৈকত আবার ফোন করে বলেন, ‘একটা বিষয় আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে রাখতে চাই, ছবিগুলো ফেসবুকে আপ করার পর থেকেই ভাইরাল হয়ে গেছে। আমি এক ধরনের থ্রেট ফিল করছি, বোঝেনইতো দেশের কন্ডিশন (অবস্থা) এই মুহূর্তে, কে জানে কখন কী হয়। গণমাধ্যমগুলোকে অনুরোধ করছি আমার বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য। পরবর্তীতে কী রিয়েকশন হয় এটার, সেটা যেন সংবাদমাধ্যমগুলো নজরে রাখে এই অনুরোধ সবার কাছে।’
ফেসবুকে ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়ায় নানারকম মন্তব্য আসছে সেখানে। সম্রাট সাম নামের একজন লিখেছেন, কিছু পুলিশের জন্যই পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বদনাম হয়। পুলিশের বড় কর্মকর্তাদের বললেও কিছু হয় না। পুলিশের ওপর শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, ভালোবাসা সব দিন দিন ক্ষয়ের পথে। আমরা চাই, পুলিশ এরকম অন্যায়ের যথাযথ ব্যবস্থা নিক এবং বিশ্বাস ফিরিয়ে আনুক।
এসকে আরাফাত নামের একজন লিখেছেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু….. এগুলো মজা করে তোলা ছবি… কেন… পুলিশেরা কি একটু হাসি, খেলা করতে পারে না শিশুদের সাথে?
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোফাল গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘এলাকা আমার থানার মধ্যে হলেও ওখানে ডিউটি করেন রিজার্ভ পুলিশ। আমার থানার পুলিশ ওখানে ডিউটি করে না। আর তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’