দক্ষিণ সুরমায় নাবালিকা ধর্ষণ স্কুলছাত্রীকে পতিতা বানিয়ে দিল পুলিশ
ডেস্ক রিপোর্ট :: দক্ষিন সুরমায় নাবালিকা ধর্ষন মামলার একমাত্র আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে ৫ম শ্রেণীর স্কুলছাত্রীকে (১৩) পতিতা বানিয়ে দিয়েছে পুলিশ। অভিযোগ ওঠেছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদি নির্যাতিত ছাত্রীর মা শামসুন নাহার। এ ব্যাপারে বাদি আদালতে নারাজি আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মৌলভাবাজারের সদরের আগনসি গ্রামের বিধবা শামসুন্নাহার ছেলে মেয়েদের নিয়ে বসবাস করেন সিলেটের দক্ষিন সুরমা থানার দাউদপুরের নজরুল ভিউতে। তার এক মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন এবং ১৩বছরের অপর মেয়ে স্থানীয় স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। একই বাড়ির অন্য ইউনিটে বাস করে রিকশাচালক আবুল হোসেন। আবুল সিলেটের মোগলাবাজার থানার বান্দরঘাট গ্রামেন হাসিম আলীর ছেলে। গত বছরের ৩ অক্টোবর রাতে রিকশাচালক আবুল হোসেন তার নাবালিকা মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে।
এ অভিযোগে শামসুন্নাহার গত ১২অক্টোবর সিলেটের দক্ষিন সুরমা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নং-০৭(১০)১৫)করেন। মামলায় রিকশাচালক আবুল হোসেনকে একমাত্র আসামী করা হয়। মামলার তদন্তভার দেয়া হয় থানার এসআই রমাকান্ত দাসকে। তদন্তেকালে পুলিশ আসামী আবুলকে গ্রেফতার করেনি। উল্টো ওই ছাত্রীর মা ও নাবালিকা মেয়ের চরিত্রে কলংক লেপন করে আদালতে মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে। গত ১৫ ফেব্র“য়ারী সিলেট মেট্রোপলিটন আমলী ৫নং আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দেন থানার এসআই রমাকান্ত দাস। রিপোর্টে ধর্ষনের অভিযোগ থেকে রিকশাচালক আবুলকে অব্যাহতি দিয়ে মামলার বাদীকে দেহব্যবসায়ী ও ধর্ষিতা ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে পতিতা বানিয়ে দেন তিনি। নাবালিকা ছাত্রী ধর্ষন মামলায় রিকশাচালক আবুলকে অব্যাহতি দিয়ে ৫ম শ্রেণীর একছাত্রীকে পতিতা বানিয়ে দেয়ার ঘটনায় এলাকার জনমমে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
মামলার বাদী বিধবা শামসুন নাহারের অভিযোগ, তার কাছ থেকে টাকা না পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আসামির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহন করেন। আর টাকার বিনিময়ে অতি গোপনে এ চার্জশিট দাখিল করেন। খবর পেয়ে বিধবা শামছুন্নাহার আদালতে নারাজির পাশপাশি এ ব্যাপারে প্রশাসনের উর্ধতন কর্তপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রমাকান্ত দাস অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মামলার বাদি দেহব্যবসায়ী এবং ভিকটিম পতিতা। বাদী ওই মেয়েকে দিয়ে দেহব্যবসা করে থাকে। পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল। ডাক্তারি পরীক্ষায় মেয়ের মধ্যে যৌনতার কোন আলামতই পাওয়া যানি। তাই তিনি আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছেন।
যৌনতার আলামত পাওয়া না গেলে ওই ছাত্রী কিভাবে পতিতা হয়, এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান এসআই রমাকান্ত দাস। অপর এক প্রশ্নের জবাবে এসএ রমাকান্ত দাস বলেন, বাদি মামলার তদন্তে আপত্তি থাকলে আদালতে আপত্তি করতে পারেন। পুনরায় তদন্তের আদেশ হলে ভালোভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেব।