জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতাদের পদবী ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা!
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদের পদ ব্যবহারে মৌখিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করে প্রচার প্রচারণা চালানোসহ সব ধরণের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে তাদের। রবিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস. এম. জাকির হোসাইন মোবাইল ফোনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এ নির্দেশনা দেন বলে জানা গেছে। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে চলমান বিরোধের প্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস. এম. জাকির হোসাইন বলেন, “পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া কয়েকজনকে নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তাই তাদের আপাতত পদ-পদবী ব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়া লীগের পক্ষ থেকেই ব্যানার-ফেস্টুন ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া নেতাদেরও পদবী ব্যবহার করে ব্যানার-ফেস্টুন না দিতে বলা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আগামী ৪ জানুয়ারী ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনেরও কাজ চলছে। এসব নিয়ে আমরা এখন ব্যস্ত আছি। তাছাড়া ৭ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী সিলেট যাবেন। এরপর আমরা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষকে নিয়ে বসে একটি সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছবে।”
তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আহমদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরী এমন নিষেধাজ্ঞার কথা অস্বীকার করেন।
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদনের পর থেকেই কমিটিতে পদ নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকা নেতারা ও পদবঞ্চিত নেতারা এক হয়ে এ কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেন এবং এ কমিটিতে অছাত্র, বিবাহিত ও ছাত্রদল, শিবির থেকে অনুপ্রবেশকারীরা স্থান পেয়েছেন দাবী করে কমিটি বাতিল করার দাবীতে আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আন্দোলনকারী নেতাদের ডেকে পাঠান। রবিবার রাতে এস এম জাকির হোসাইনের পরীবাগস্থ বাসায় বৈঠকে বসেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতারা।
এ বৈঠকে উপস্থিত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, বৈঠক থেকেই কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে মোবাইল ফোনে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদেরকে সাংগঠনিক পরিচয়, পোস্টার-ব্যানার না ব্যবহারের নির্দেশনা প্রদান করেন। ৭ জানুয়ারির পূর্বে তাদের হাতে কমিটির চিঠি না দিতেও নির্দেশ দেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরী বলেন, “একটি পক্ষ কমিটি স্থগিতের প্রচারণা চালাচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ পাগলের প্রলাপ। এসব ভুয়া বানোয়াট তথ্যে বিভ্রান্ত না হবার জন্য তিনি আহ্বান জানান। এমন কোন সিদ্ধান্ত হলে তা লিখিত ভাবে সাংবাদিক ভাইদের জানানো হবে বলেও মন্তব্য করেন রায়হান।”
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহারিয়ার আলম সামাদ বলেন, “কমিটি স্থগিতের বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। কিছু কুচক্রী মহল ছাত্রলীগের ভাব মূর্তি নষ্ট করার জন্য এমন গুজব ছড়াচ্ছে। যদি কখনো কমিটি বিলুপ্ত বা স্থগিত করা হয় তাহলে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক লিখিত ভাবে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানাবেন।”
রবিবার রাতে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের সাথে বৈঠকে জেলা ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সহ-সভাপতি হোসাইন আহমদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব কান্তি দাশ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মওদুদ আহমদ, গণমিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কনক পাল অরূপ, ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান খান জুয়েল, রাসেল আহমদ প্রমুখ।