কমলগঞ্জে বাঁশ চুরির অভিযোগে শিশু কে বেঁধে নির্যাতন
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বাঁশ চুরির অভিযোগে ঘরে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে হাবিবুর নামের শিশুকে নির্যাতন করা হয়েছে। পরে উল্টো ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতনকারী। এ ঘটনার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজুদ আলী রশি দিয়ে বেঁধে শিশুটিকে উদ্ধার করছেন বলে স্বীকার করছেন। এ ঘটনাটি ঘটে ১৬ অক্টোবর শুক্রবার শমশেরনগর ইউনিয়নের নিত্যানন্দপুর গ্রামে।
নির্যাতিত শিশুর পিতা সিএনজি অটোরিক্সা চালক দেলওয়ার হোসেন বলেন, সকালে ছিটকা জাল তৈরীতে একটি চিকন টেটুয়া বাঁশ আনতে পাশের বাড়ির আলতা মিয়ার বাড়িতে যায়। এসময়ে বাড়ির লোকজন ছেলেটিকে সবজির জমিতে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়তে বলেন। ছেলেটি বাঁশের আশায় কিছু সময় জমিতে মাটি খুঁড়ে। এরপর ওই ঘরের লোকজন হাবিবুরকে বাঁশ ঝাড়ের নিচে পরিত্যক্ত একটি বাঁশের টুকরো নিতে বলেন। বাঁশ হাতে নেয়ার পরই আলতা মিয়ার ছেলে রাজু, আমিন, মেয়ে হেলেন ও মিলন শিশুটিকে ঘরে নিয়ে কিল ঘুষি মেরে ঘরের বারান্দার খুটির সাথে দঁড়ি দিয়ে বেধে রাখে।
খবর পেয়ে শিশুর মা ও দাদি তাকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে রাজু আমিনরা শিশুটিকে ছাড়তে রাজি হননি। প্রায় এক ঘন্টা পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজুদ আলী শিশুটিকে উদ্ধার করেন। ইউপি সদস্য এ ঘটনায় সামাজিক বৈঠক করে সমাধান করার কথা বলেন।
দেলোয়ার হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান (৯) ব্র্যাক পরিচালিত একটি বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। তিনি আরও বলেন, ইউপি সদস্যের সামাজিক বিচারের অপেক্ষা করে থানায় কোন অভিযোগ করেননি।
একদিন পরে আলতা মিয়ার একটি ছাগল তাঁর সবজি ক্ষেত নষ্ট করায় হাবিবুর পূর্বের ক্ষোভে ছাগল আটকিয়ে খোয়াড়ে দিতে চায়। পাশ্ববর্তী বাড়ির এক ভদ্রলোক ছাগলটিকে নিয়ে যান। এঘটনায় আলতা মিয়ার ছেলে আমিন শিশুটি ও তার বাবা মাকে ছাগল চুরির অভিযোগ তুলে শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তবে ঘটনা সম্পর্কে অভিযুক্তআলতা মিয়ার ছেলে আমিন আলী বলেন, বাঁশ চুরির দায়ে শিশু হাবিবকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তবে তাকে কেউ মারা মারী করেনি। আমিন আরও বলেন, শিশুটি চুরি করে গ্রামের মানুষকে অতিষ্ট করে তোলেছে। তাছাড়া এ ঘটনার পর শিশুর একটি ছাগল চুরি করে নেয়। সে জন্য শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
ইউপি সদস্য তাজুদ আলী বলেন, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে খুটির সাথে বাঁধা অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে শিশুটিকে তার বাড়ীতে পৌছে দিয়ে আসছি। তবে শিশুটি কোব দুষ্ট প্রকৃতির লোক। শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, দেলওয়ার হোসেন তার শিশু হাবিবকে বেধে নির্যাতনের মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। অপর পক্ষ আমিন আলী ছাগল চুরির অভিযোগ করে ইউনিয়ন আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক মতিউর রহমান বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ তিনি পাননি। তবে অভিযোগ হলে তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।