রাজনগরে দপ্তরী কর্তৃক দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় তোলপাড়
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ দপ্তরী কর্তৃক দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় জেলার রাজনগরের মহলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত এক সপ্তাহ যাবত স্কুলটি অনেকটা শিক্ষার্থী শুণ্য হয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অভিযুক্ত দপ্তরী পরিবর্তন না করা পর্যন্ত তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবে না বলে জানিয়েছে। এবিষয়ে তারা জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। এছাড়া গত সোমবার মৌলভীবাজার-রাজনগর সড়কে স্কুলের সম্মুখে মানববন্ধন কর্মসূচীও পালন করে এবং শিক্ষামন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। জানা যায়, গত ২৫ মার্চ স্কুলের মাঠে খেলাধুলার অপরাধে উত্তর মহলাল গ্রামের মিলাদ মিয়ার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়–য়া ছেলে সাকিব মিয়াকে (৭) বাথরুমে নিয়ে মারধর করে স্কুলের দপ্তরী মো: জাকারিয়া। এঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৬ মার্চ পরচক্র ও মহলাল গ্রামের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় ৩/৪টি দোকান ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগেরও ঘটনা ঘটে। পরে রাজনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরবর্তীতে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ূন কবির, এলাকার মুরব্বী সৈয়দ আনকার আলী গং জামানত হিসেবে ৫০ হাজার টাকা জমা রেখে শালিসে বিষয়টির সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু এক মাসেরও অধিক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় অভিভাবকরা ফুঁসে ওঠে। অভিভাবকরা দপ্তরী মো. জাকারিয়াকে পরিবর্তন দাবি করে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। তার অনুলিপি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করেছে।
এদিকে সরেজমিন স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে গুটি কয়েক শিক্ষাথী ছাড়া উপস্থিতি নেই বললেই চলে। জানা যায়, গত এক সপ্তাহ যাবত স্কুলটিতে এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত দপ্তরী মো: জাকারিয়া মহলাল গ্রামের বাসিন্দা নয়। তার বাড়ি পাশের পরচক্র গ্রামে এবং সে পরকিছ মিয়ার ছেলে। সে অষ্টম শ্রেণি পাশ করেনি এবং ভোটার তালিকায়ও তার নাম নেই। এঅবস্থায় স্বজনপ্রীতির সুযোগ নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির ও মনুসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত তাকে চাকুরী দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এবিষয়ে মহলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ছয়ফুল আলম জানান, বিষয়টি জানার পর আমি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানিয়েছি। শিক্ষার্থী না আসায় স্কুলের কার্যক্রমে অচবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির জানান, আজ মঙ্গলবার এবিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক আহবান করা হয়েছে। আশা করি এর একটা সমাধান হবে। এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পঞ্চানন বালা জানান, এবিষয়ে তিনি তেমন কিছু জানেন না তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। তিনি জানান, তিনি মন্ত্রী এমপি নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।