আটক মার্কিন তরুণীকে ধর্ষন করেছিলেন বাগদাদি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ নিহত মার্কিন ত্রাণ কর্মী কেইলা মুলারকে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান নেতা আবু বকর আল বাগদাদি। শুক্রবার স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যম এবিসি নিউজের কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন মার্কিন কর্মর্তারা।
আইএসের হাতে বন্দি থাকা অবস্থায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিহত হয়েছিলেন ২৬ বছরের মার্কিন তরুণী কেইলা মুলার। ২০১৩ সালে সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে ত্রাণকর্মী হিসেবে কাজ করার সময় অপহৃত হয়েছিলেন মুলার। পরে আইএসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, জর্ডানে মার্কিন বিমান হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। তবে তার মৃত্যুর জন্য আইএসকে দায়ি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আরিজোনা অঙ্গরাজ্যের এ ত্রাণকর্মী ২০১২ সালে তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তে শরণার্থী শিবিরগুলোতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, নিহত হওয়ার আগে আইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদির হাতে উপর্যুপরি ধর্ষিতা হয়েছিলেন ওই মার্কিন তরুণী। সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতায় অংশ নেয়া মার্কিন কর্মকর্তারা গত জুনেই তার পরিবারকে এই ধর্ষণের বিষয়ে সচেতন করেছিলেন। নিহত মুলারের বাবা-মা কার্ল ও মার্শা এবিসি নিউজকে জানান,‘আমরা আগেই খবর পেয়েছিলাম কায়লার ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। বাগদাদি তাকে নিজস্ব সম্পত্তির মতই ব্যবহার করছেন। গত জুনেই সরকার আমাদের এ কথা জানিয়েছিল।’
মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানায়, বাগদাদি আইএসের আরেক জ্যেষ্ঠ সদস্য আবু সাইফের বাড়ি থেকে মুলারকে তুলে নিয়ে আসে। আইএসের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা আবু সাইফ দখলকৃত তেল ও গ্যাসক্ষেত্রের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। গত মে মাসে সাইফ যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত হন বলে মার্কিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এবিসি নিউজ জানিয়েছে।
এবিসি নিউজ চ্যানেল আরো জানায়, মুলারকে আটক রাখা কম্পাউন্ডে বাগদাদির নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হতো। সাইফের আস্তানায় মার্কিন বাহিনীর অভিযানের সময় আরো দুই তরুণী ছিল। ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের এ দুই তরুণীকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করত সাইফ।
মুলারকে আবু সাইফ ও তার স্ত্রী উম্মে সাইফ ধরে নিয়ে যায়। মে মাসের অভিযানে উম্মে সাইফকে আটক করে মার্কিন সেনারা। ওই অভিযানে বেশ কিছু ইয়াজিদি নারীকেও উদ্ধার করা হয়। এসব নারীকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করত আইএস যোদ্ধারা। আবু সাইফ ও উম্মে সাইফ এসব নারীর তত্ত্বাবধান করত বলে পেন্টাগন জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে উম্মে সাইফকে ইরাকের উত্তরাঞ্চলের কুর্দি কর্তৃপক্ষের কাছে বিচারের জন্য তুলে দেয় মার্কিন সেনারা
তবে বন্দি অবস্থায় মুলার তার বাবা-মাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, জিহাদিরা তার সঙ্গে সম্মানজনক ও সদয় ব্যবহার করছে। সম্প্রতি তার যৌন নিপীড়নের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, যে কোনো কারণেই মুলার তার যৌন নির্যাতনের কথা প্রকাশ করতে চাননি। তবে তিনি কেন মিথ্যা বলেছিলেন তার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।