বালাগঞ্জে তিন সন্তানের জননী পশাবিকতার শিকার
ঘটনার ৬দিনেও ধর্ষক ধরা পড়েনি
শাহ মো. হেলাল, বালাগঞ্জ: বালাগঞ্জে তিন সন্তানের জননী নির্মম পাশবিকতার শিকার হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে আহত মহিলা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনার ৬দিন হলেও ধর্ষককে আটক করতে পারেনি পুলিশ। ভ’মিহীন নির্যাতিত এ পরিবারকে মামলা তুলে আপোষে নিষপত্তির জন্য অব্যাহতভাবে চাপ সৃস্টি করছে ধষর্কের প্রভাবশালী পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে গত মাসের ২৬ তারিখ উপজেলার বালাগঞ্জ ইউনিয়নের রিফাতপুর গ্রামে। স্থানীয়রা নির্যাতিত মহিলাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং মহিলার স্বামী বিষয়টি বালাগঞ্জ থানাকে জানান। নির্য়াতিত মহিলার স্বামী বাদী হয়ে রিফাতপুর গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে লাকী মিয়া (২৫) কে আসামী করে মামলা দায়ের করলে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আমলে নেয়। মামলা নং ১৪, তারিখ:৩০.০৭.২০১৫ইং।
মামলা ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পাশবিকতার শিকার ভূমিহীন এ মহিলার স্বামীর বাড়ি রিফারতপুর গ্রামে। একই গ্রামের শফিক মিয়ার ফিসারীর বাড়ির পুকুর পাড়ে গত ২বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। ঘটনার দিন নির্যাতিত সাহেদা বেগমের (৩৫) স্বামী দিন মজুর আব্দুল মান্নান প্রতিদিনের মত নিজ কাজে চলে যান। ঐ দিন দুপুর ২টার সময় নির্যাতিত মহিলাকে একা ঘরে থাকার সুবাদে ধর্ষক লাকী মিয়া ঘরে প্রবেশ করে মহিলাকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিলে মহিলা তাতে অসম্মতি দিলে সে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে মহিলা অজ্ঞান হলে সে তাকে পাশবিক নির্যাতন করে। স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় বালাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তকরণের কারণে তাকে সাথে সাথে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে মহিলাকে হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে ওসমানীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। নির্যাতিতা সাহেদার বেগমের জরায়ুতে ৯টি সিলাই রয়েছে এবং শরীরে নির্য়াতনের বিভিন্ন আলামত রয়েছে। তার গলায় অস্বাভাবিক জখম রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, সম্ভবত: মহিলাকে এ কাজে বাধ্য করতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছিল ধর্ষক। মহিলা তাতে রাজি না হলে ধর্ষক ঐদিন ধর্ষন করে তার দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ হিসেবে দাড়ালো কোন কিছু দিয়ে কেটে পেলে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ঘটনার ৬দিন অতিবাহিত হলেও ধর্ষক ও মামলার একমাত্র আসামী লাকী মিয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অন্য দিকে ধর্ষক লাকী মিয়ার ধনাঢ্য পরিবার বিষয়টি আপোষে নিষ্পত্তি করার জন্য অসহায় এ পরিবারকে অব্যাহতভাবে চাপ সৃস্টি করছে। নির্যাতিত মহিলার স্বামী তিন সন্তান আর এলাকায় মান সম্মান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইয়াবর আলী জানান, তিনি ভিকটিমের চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন।
পাশবিকতার শিকার সাহেদা বেগমের স্বামী আব্দুল মান্নান জানান, প্রতিদিনের মত ঐদিন আমি আমার কাজে চলে যাই। আমার এক ছেলে মাদরাসায় পড়ে। আমার বোন আমার বাড়িতে বেড়াতে আসলে দুপুর দেড়টার সময় আমার ২ মেয়ে বিদায় দিতে কিছু দুর পথ আগাইয়া দিতে যায়। এ সময় আমার ছেলে মাদরাসায় ছিল। এ নিরবতা ও একা পেয়ে নির্য়াতনকারী লাকী মিয়া ২টার সময় আমার স্ত্রীর উপর নিয়াতন করে। আমি স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। থানায় মামলা দিয়েছে। ৬দিন হলে অপরাধী ধরা পড়ছে না। আমি এ নির্মম ঘটনার বিচার চাই।
বালাগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম তালুকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় একজনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।