শাবিতে শিক্ষকের চাকুরিচ্যুত করার দাবিতে ধর্মঘটে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি : আসছে কঠোর কর্মসূচি

SUSTশাবি প্রতিনিধিঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাছির উদ্দিনের চাকরিচুত্যির দাবিতে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে সর্বাত্মক ছাত্রধর্মঘট পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চলাচল করেনি। কোন বিভাগের ক্লাস হয়নি। গত ২২এপ্রিল সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই শিক্ষককে এক বছরের জন্য একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চাকরিচ্যুতির দাবিতে ধর্মঘটের আহবান করে। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করায় কোন বিভাগেই ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে দুপুর ১২টায় সিন্ডিকেট মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য ভিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আগামী ২দিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে রোববার থেকে কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ধর্মঘট সফলের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা দিনভর প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এছাড়া ক্যাম্পাসে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে। তবে শিক্ষার্থীদের ধর্মঘটে প্রক্টরের রহস্যেজনক ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায়ে আগামী রোববার থেকে আবারো কর্মসূচীতে নামবেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, শাবির লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সিন্ডিকেট সভায় কর্মচারী আবু সালেহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিস্কার, বিভাগের অফিস সহকারী আতিকুর রহমানকে নিজ পদ থেকে পদাবনতি প্রদান এবং ছাত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে ওই বিভাগের শিক্ষক নাছির উদ্দিনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। সিন্ডিকেটের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক নাছির উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির দাবিতে বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সর্বত্মাক ধর্মঘটের ডাক দেয়। শুক্রবার ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে প্রশাসন দাবি না মেনে নিলে আগামী রোববার থেকে ধর্মঘটসহ কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে বলে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র শরীফুল ইসলাম বুলবুল জানিয়েছেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের স্বত:স্ফুর্ত আন্দোলনে প্রক্টরের অযাচিত হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আন্দোলনরত ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী সূত্র জানায়,বৃহস্পতিবার ধর্মঘট চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিমাদ্রি শেখর রায়সহ প্রক্টরিয়াল বডির সাথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এসময় প্রক্টর ধর্মঘট কর্মসূচী কিংবা কোন আল্টিমেটামের কথা জানেন না বলে দাবি করলে শিক্ষার্থীরা দারুণ ক্ষুব্ধ হন। এতে প্রক্টর তাদেরকে সঠিক পথ অবলম্বন করার আহবান জানান। প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদেরকে সিন্ডিকেট সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আন্দোলন স্থগিতের আহবান জানিয়ে বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত কারো মনোপুত না হয় তাহলে এরজন্য আপিল করা যেতে পারে। অপরদিকে প্রক্টর হিমাদ্রী শেখর রায়ের উপর দারুণ চটেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে,ধর্মঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চলাচল ও ক্লাস পরিক্ষা হবে কিনা এমন প্রশ্নে প্রক্টরের সাথে যোগাযোগ করলে প্রক্টর তাদেরকে পরিবহন চলাচল ও ক্লাস পরিক্ষা স্বাভাবিক গতিতে চলবে এমন আশ্বস্থ করলে শহর থেকে আসা কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে বেকায়দায় পড়ে যান। শিক্ষার্থীরা দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছেন।