মেয়র নির্বাচিত হওয়াই আমার কাল হয়েছে : আরিফ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ প্রায় ১৫ দিন ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে রয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। কোথায় আছেন, কি করছেন এ ব্যাপারে জানা নেই কারও। আরিফুল হকের ঘনিষ্টজনরাও কোন হদিস দিতে পারছেন না তার। নগরভবন সংশ্লিষ্ট দুই একজন আরিফের অবস্থান জেনে থাকলেও অজানা আতঙ্কে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন তারা।
আত্মগোপনে থাকা মেয়র আরিফের সাথে শুক্রবার রাত ৯টায় মুঠোফোনে কথা হয় এমন দাবী একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের। আলাপচারিতায় তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় তাকে জড়ানো নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। পাঠকদের জন্য এই আলাপচারিতা তুলে ধরা হলো-
আলাপচারিতায় শুরুতেই মেয়র আরিফ নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে বলেন, ‘৫৬ বছর বয়সে আমার বিরুদ্ধে কোন দিন কোন থানায় মারামারিরও একটি মামলা হয়নি। আর বোমা গ্রেনেড হামলার মতো জঘন্যতম কাজে সম্পৃক্ত থাকার প্রশ্নই উঠে না। যদি এ রকম ঘটনার সাথে নূন্যতম কোন সম্পৃক্ততা থেকে থাকে তবে আমার উপর আল্লাহর গজব পড়বে।’
আরিফ বলেন, চারদলীয় জোট সরকারের সময় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সাথে তিনি সিলেটের উন্নয়নে কাজ করেছেন। সাইফুর রহমান ছিলেন জোট সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী। তাই কোন প্রয়োজন হলে তিনি সাইফুর রহমানের কাছেই ছুটে গেছেন। অন্য কোন মন্ত্রীর বাসা বা অফিসে তিনি কখনো যাননি। যাওয়ার প্রয়োজনও পড়েনি। আর বৈঠক করাতো দূরের কথা।
সিলেটের উন্নয়নে নিজেকে সঁপে দেয়ায় উন্নয়ন বিদ্বেষীরাই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছেন দাবি করে আরিফ বলেন, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও নগরবাসীর সহযোগিতায় কম সময়ের মধ্যে ঈর্ষনীয় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা এটা মেনে নিতে না পেরেই তাকে কিবরিয়া হত্যা মামলায় জড়িয়েছে।
মেয়র আরিফ বলেন, সিটি নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। মেয়র হওয়াই তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়র নির্বাচিত না হলে এ রকম জঘন্যতম মামলায় তাকে জড়ানো হতো না।
নিজেকে নির্দোষ দাবি করে মেয়র আরিফ বলেন, তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার। প্রতিহিংসা বশত তাকে এই মামলায় আসামী করা হয়েছে। যারা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদের বিচার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়ে মেয়র বলেন, আইনের মাধ্যমেই তিনি সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করবেন। মিথ্যার ধূয়াশা কেটে সত্য একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
সবশেষে আরিফ জানান, আইনী কাজে তিনি ঢাকায় ছিলেন। এখন ফিরে এসেছেন সিলেটে। ধৈর্য্যসহকারে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য তিনি নগরবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন। তিনি বলেন- সাইফুর রহমান তার রাজনৈতিক গুরু। তার সাথে থেকে তিনি উন্নয়নের রাজনীতিই শিখেছেন, প্রতিহিংসার নয়।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবীদ উল্লেখ করে আরিফ এই হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের সুষ্ঠু তদন্ত স্বাপেক্ষে খোঁজে বের করে দৃষ্টামূলক শাস্তির দাবি জানান।