গোয়াইনঘাটে তলিয়ে গেছে বসত ঘর- ৪ হাজার হেক্টর ইরি বোরো ধান

gowainghat photo-24-04-2016 (1)গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে গোয়াইনঘাটে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে উপজেলার নিঞ্চলের বসত ঘর ও রাস্তাঘাট। পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন প্লাবিত অঞ্চলের মানুষ। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সারী-গোয়াইন ও গোয়াইন-জাফলং সড়ক পানিতে তলিয়ে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একই সাথে তলিয়ে গেছে উপজেলার প্রায় ৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ইরি ও বুরো ধান। বন্যার কারণে দেশের বৃহত্তম বিছনাকান্দি ও জাফলং এ দুটি পাথর কোয়ারির সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ  রয়েছে। এতে পাথর কোয়ারি সংশ্লিষ্ট প্রায় অর্ধ-লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।
এদিকে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্কুল ও মাদ্রাসায় বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় গতকালের নির্ধারিত দিনের প্রাথমিকের পরীক্ষা সাময়িক ভাবে স্থগতি করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্যার পানি কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও গত শনিবার রাতে সারী ও পিয়াইন নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার রুস্তমপুর, পূর্ব জাফলং, পশ্চিম জাফলং, লেঙ্গুরা, আলীরগাঁও, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও, ফতেহপুর ও ডৌবাড়ির নিম্নাঞ্চলের বসত বাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একই সাথে উপজেলার প্রায় ৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ইরি ও বুরো ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।
গতকাল রোববার সরজমিন পরিদর্শন কালে দেখা যায়, বসত বাড়িতে পানি উঠায় অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন । বসত বাড়িতে পানি উঠায় অনেকেই তাদের গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। আবার অনেককেই গবাদি পশু নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।  নদীর তীরবর্তী মানুষজনের মাঝেও বিরাজ করছে নদী ভাঙ্গন আতঙ্ক।
এদিকে বন্যার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় সারী-গোয়াইনঘাট-সড়কের লাফনাউট, কমপুর, বেকরা, বার্কীপুর ও জাফলং-গোয়াইনঘাট সড়কের ছোটখেল এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান জানিয়েছেন আকস্মিক বন্যায় উপজেলার ৩ হাজার ৭শ ৫৫ হেক্টর জমির ইরি ও বুরো ধান নিমজ্জিত হয়েছে। তবে বন্যার পানি দ্রুত কমে গেলে কৃষকদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সালাহ উদ্দিন জানান অবিরাম বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে উপজেলার হাওর এলাকার ফসলি জমির ইরি ও বুরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্মূখীন হয়ে পড়েছেন।  নি¤œাঞ্চলগুলোর কিছু বসত বাড়ি বন্যায় প্লাবিত হলেও তেমন কোন ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে রোববার বিকেলে বন্যা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।