রিজার্ভ চুরির ৬৩১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চায় আরসিবিসি
ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিতে সহায়তা করার অভিযোগে সমালোচিত ফিলিপাইনের রিজাল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) মঙ্গলবার বলেছে, নির্দেশ পেলে তারা বাংলাদেশের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার (৬৩১ কোটি টাকা) উত্তোলন ও জমা করে ফেরত দিতে প্রস্তুত।
ফিলিপাইনের সিনেট ব্লু রিবন কমিটিতে পঞ্চম দিনের শুনানিতে মঙ্গলবার ব্যাংকটির পক্ষ থেকে একথা বলা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্য, ইন্টারঅ্যাক্সিয়ন।
‘আমরা যদি দোষী সাব্যস্ত হই, আমি বোর্ডের কাছে সুপারিশ করব যে কিছু অর্থ যোগান দেয়ার,’ বলছিলেন আরসিবিসির প্রেসিডেন্ট ও সিইও লরেঞ্জো তান। রিজার্ভ চুরির কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে তিনি এখন ছুটিতে আছেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তর হয়েছে এই আরসিবিসির মাধ্যমে।
সেই অর্থ চীনা ব্যবসায়ী উইলিয়াম এস গোয়ের একাউন্টে জমা হয়। পরে সেই টাকা ফিলরেম সার্ভিস করপোরেশন নামে একটি রেমিট্যান্স কোম্পানির মাধ্যমে কয়েকটি ক্যাসিনোসসহ কয়েকটি একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। তবে গোর দাবি, ওই একাউন্ট তার নয়, ভুয়া ছিল।
সিনেট কমিটির মঙ্গলবারের শুনানিতে অংশ নেন ফিলরেমের দুজন কর্মকর্তা চুরি হওয়া সেই অর্থের মধ্যে ২ কোটি ডলার ইতোমধ্যেই ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবারের শুনানিতে সিনেটর রাফ রেক্টো জানান যে জাঙ্কার অপারেটর কিম অং ফিলিপাইনের এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের কাছে ৮২ লাখ ৪০ হাজার ডলার (প্রায় ৬৪ কোটি টাকা) ফেরত দিয়েছেন। ফিলরেমের কাছে এখনো ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার জমা আছে।
রেক্টোর এক প্রশ্নের জবাবে আরসিবিসির প্রধান তান বলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ব্যাংকটির বাজার মূলধন কমে গেছে।
এদিকে ফিলিপাইনের দৈনিক ইনকোয়ারারের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরির ঘটনায় আরসিবিসি আঞ্চলিক বিক্রয় পরিচালক ব্রিগিত্তে ক্যাপেনা ও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট রাউল ত্যানের নাম বলেছেন সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস-দেগুইতো। মঙ্গলবার সকালে সিনেটের ব্লু-রিবন কমিটির শুনানিতে তাদের নাম বলেন দেগুইতো।
পঞ্চম দফা শুনানিতে তাকে মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের প্রেসিডেন্ট সালুদ বাতিস্তার মুখোমুখি করা হয়।
রিজার্ভের অর্থপাচারের বিষয়ে এর আগের চার দফা শুনানিতে এ পর্যন্ত অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে চীনা ব্যবসায়ী কিম অং, ওয়েক্যাং জু, উইলিয়াম গো, আরসিবিসির মায়া দেগুইতো, অ্যাঞ্জেলা তোরেস ও লরেঞ্জো তানএবং বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের প্রেসিডেন্ট সালুদ বাতিস্তার নাম। এছাড়াও চীনের দুই ক্যাসিনো অপারেটর গাও ও দিং- অর্থপাচারের এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন চীনা ব্যবসায়ী কিম অং। এদিকে, সোমবার মায়া দেগুইতো এবং তার আইনজীবী ফার্দিনান্দ টোপাকিও-এর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছেন আরসিবিসির প্রেসিডেন্ট লোরেনজো তান। এরমধ্যেই দেগুইতোসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলও।