‘বড় হওয়ার’ স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল নাজিমের

56426ডেস্ক রিপোর্টঃ ‘অনেক বড় হওয়ার’ স্বপ্ন নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেটের বিয়ানীবাজারের নাজিম উদ্দিন সামাদ। লক্ষ্য ছিল আইন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি (এলএলএম) নিয়ে পেশাজীবন শুরু করবেন। সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি করা নাজিমকে ঢাকায় যেতে বারণ করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের ইচ্ছা ছিল সিলেটেই এলএলএম করুক নাজিম। কিন্তু ‘বড় হওয়ার’ স্বপ্ন নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল সে। এই বড় হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে তার। ঘাতকদের নৃশংসতায় খুন হওয়া নাজিমের লাশের অপেক্ষায় এখন তার স্বজনরা।

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ভরাউট গ্রামের মরহুম আবদুস সামাদের ছেলে নাজিম উদ্দিন। পাঁচ ভাই ও দুইবোনের মধ্যে নাজিম ছিল চর্তুথ। বড় দুইভাইয়ের মধ্যে একজন থাকেন যুক্তরাজ্যে, অপরজন থাকেন ফ্রান্সে। স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান হলেও নাজিম কখনোও বিলাসিতায় গা ভাসায়নি। ছোটবেলা থেকেই সে ছিল মেধাবী।

বিয়ানীবাজারের আছিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করার পর সে ভর্তি হয় সিলেট নগরীর স্কলার্সহোম কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পাশ করে সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবি অনার্সে ভর্তি হয়। এলএলবি পাশের পর পরিবারের সদস্যরা চেয়েছিলেন নাজিম সিলেটেই এলএলএম সম্পন্ন করুক।

নাজিমের বড় বোন পারুল বেগম জানান- ‘নাজিম বলতো সে অনেক বড় হবে। বড় হতে হলে ঢাকায় যেতে হবে, ঢাকায় পড়ালেখা করতে হবে। বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সে ঢাকায় পড়তে গিয়েছিল। কিন্তু তার সেই বড় হওয়ার স্বপ্নই কাল হয়েছে।’

পারুল বেগম আরও জানান- ‘খুন হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে ফোনে তার সাথে কথা হয় নাজিমের। সে বলেছিল আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) সিলেট আসবে। আসার সময় আমার ছোট ছেলের জন্য সাইকেল কিনে নিয়ে আসবে। আমার ভাই ঠিকই বাড়িতে আসছে, কিন্তু এভাবে তার বাড়ি আসা আমরা কখনো চাইনি।’

ছেলে খুনের খবর পাওয়ার পর থেকে বাকশক্তি হারিয়েছেন নাজিমের ষাটোর্ধ্ব মা তৈরুন্নেছা। ছেলের ছবি বুকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। কারো কন্ঠ শুনলেই বিছানা ছেড়ে ওঠে ছেলেকে খুঁজতে থাকেন। মাঝে মধ্যে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন।