সিসিটিভির আওতায় সিলেট মহানগরী
ডেস্ক রিপোর্টঃ মেয়র নির্বাচিত হয়েই সিলেট সিটি করপোরেশনকে সিসিটিভির আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। শুধু সিসিটিভিই নয় তিনি গোটা নগরে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক চালুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছিল বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানিও। কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু আরিফুল হক চৌধুরী কারাবন্দি হওয়ার পর সব প্রক্রিয়ায়ই ভেস্তে গেছে। তবে, এরপর সম্প্রতি সময়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ২০টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। এই সিসিটিভি ক্যামেরা সিটি করপোরেশন বসালেও মনিটরিং করবে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। অপরাধীদের কাছে আতঙ্ক সিলেটের রাস্তায় বসানো সিসিটিভি। সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুই বছর আগে নগরীর বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কেটসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগেও বসানো হয় সিসিটিভি। এ কারণে নগরীর সুরমা মার্কেট থেকে কোর্ট পয়েন্ট হয়ে চৌহাট্টা, আম্বারখানা পর্যন্ত রাস্তায় রয়েছে সিসিটিভি। নগরীর নাইওরপুলস্থ মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশ এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিটিভি বসানো হয়। বছর খানেক আগের ঘটনা। স্পট নগরীর জিন্দাবাজারের ওভারসিজ সেন্টারের সামনে। ওই এলাকায় একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা। ছিনতাইয়ের পর সিসিটিভি ফুটেজে উঠে আসে পুরো ছিনতাইয়ের ঘটনা। কীভাবে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে, কারা কীভাবে ছিনতাই করতে আসে এসব বিষয় ধরা পড়ে সিসিটিভিতে। পরবর্তীকালে ফুটেজের মাধ্যমে আসামিও শনাক্ত করতে পারে পুলিশ। জেল রোড এলাকায়ও কয়েক মাস আগে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সিলেটের চৌহাট্টা, মীরবক্সটুলা, নয়াসড়ক, জেল রোড পয়েন্ট, অনুরাগের সামনে ছিনতাইয়ের অন্যতম স্পট। কিন্তু সিসিটিভির কারণে এসব এলাকায় ছিনতাই কমে এসেছে। পাশাপাশি নগরীর জিন্দারাবাজার, বারুতখান রোড, জল্লাপাড় রোড, বন্দর রোডেও রয়েছে সিসিটিভি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এসব এলাকায় ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যের চেয়ে আতঙ্কের এলাকা পরিণত হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভির নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা আইনের আওতায় চলে আসবে। এ থেকে খুব দ্রুত অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানান তারা। পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি, বেসরকারি কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে বসানো সব সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিং করে সিলেটের পুলিশ। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক মার্কেট, ব্যাংক, প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে নিজেদের উদ্যোগে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্যামেরা প্রয়োজনীয় সময়ে পুলিশ মনিটরিং করে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের নাইওরপুলস্থ কার্যালয়ে একটি মনিটরিং কক্ষও রয়েছে। ওখানে বসে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে। সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, প্রাথমিক অবস্থায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সিলেট নগরীর তালতলা পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে সুরমা মার্কেট, সিটি পয়েন্ট বন্দরবাজার (ডাকঘরের সামন), ধোপাদিঘীরপাড়, সোবহানীঘাট হয়ে নাইওরপুল পর্যন্ত এবং সিটি পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত সড়কে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। প্রথম দফায় নগরীর প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়ক সিসি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণের আওতায় আসছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী রুহুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরা লাগানোর এই পাইলট প্রকল্প উপকারে এলে পুরো নগরীতে তা বাস্তবায়ন করা হবে। এদিকে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বসানো সিসি ক্যামেরাগুলো পর্যবেক্ষণ করবে সিলেট মহানগর পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সিলেট সিটি করপোরেশন যে ২০টি সিসিটিভি বসাচ্ছে সেগুলো মনিটরিং করবে পুলিশ। অপরাধী শনাক্তে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাগুলো কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে জানান তিনি। (মানবজমিন)